রাজীব কুমারকে আগাম জামিনের সুযোগ দিল সুপ্রীম কোর্ট

প্রাক্তন কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার (File Photo: IANS)

কলকাতা প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করার পূর্ণ স্বাধীনতা দিল সিবিআইকে সুপ্রিম কোর্ট,সেই সঙ্গে গ্রেফতারি এড়াতে আগাম জামিনের রাস্তাও রাজীবের সামনে খুলে রাখলাে শীর্ষ আদালত।রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করতে কোনও বাধা রইল না সিবিআইয়ের।সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে তথ্যপ্রমাণ লােপাটের অভিযােগ রয়েছে তাঁর ওপর।তাঁর নেতৃত্বেই রাজ্য সরকারের গঠিত তদন্তকারী সংস্থা সিট তদন্ত করছিল।

সুপ্রিম কোর্টে রাজীব কুমারের গ্রেফতারি মামলার শুনানি ছিল আজ।সিবিআই নিজেদের হেফাজতে নিয়ে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে কিনা সেই নিয়ে ছিল শুনানি।আর তাতেই সিবিআইকে গ্রেফতারের সুযােগ করে দিল বেঞ্চ। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে সিবিআই জেরা করতে পারবে বলে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। আজকের মামলার শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বেঞ্চে ছিলেন না,সেই কারণে ৭ দিনের মধ্যে জামিনের আবেদন করতে পারবেন তিনি।এই সাত দিন তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করতে পারবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।সুপ্রিম কোর্টের আজকের নির্দেশ রাজীব কুমারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের কাছেও বড় ধাক্কা বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানিয়েছেন,ফেব্রুয়ারি মাসে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা তুলে নেওয়া হচ্ছে।সিবিআইকেও নিয়ম মেনে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।সে রাজীব কুমারের আইনজীবী আজ আদালতকে জানিয়েছেন,তাঁর মক্কেলকে হেনস্থা করার জন্য তদন্তকারী সংস্থা নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে। আইনের অপব্যবহার করার সুযোগ সিবিআইকে যাতে না দেওয়া হয় সেই আবেদন করেন রাজীব কুমারের আইনজীবী।সেই প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত সিবিআইকে আইন মেনে কাজ করার নির্দেশ দিল বলে মনে করা হচ্ছে।


সিবিআই রাজীব কুমারকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে।রাজীব কুমার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় সারদা কাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ লােপাটের আশঙ্কা করে সিবিআই।রাজীব কুমারের নেতৃত্বে সারদা চিটফান্ড কাণ্ডের তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে রাজ্য সরকার।তখন বিধাননগর কমিশনারেটের কমিশনার ছিলেন রাজীব কুমার।পরে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার নেয়।কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।এই পুলিশ কর্তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চেয়েছিল সিবিআই।

সিবিআইয়ের হাতে সারদা কাণ্ডের তদন্তভার যাওয়ার পর সংস্থা দাবি করে তথ্যপ্রমাণ লােপাটের সঙ্গে তথ্য বিকৃত করা হয়েছে।কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জেরা করার জন্য রাজীব কুমারকে ডেকে পাঠান হলেও তিনি বারবার তা এড়িয়ে যান।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় রাজীব কুমারের বাড়ি গিয়ে জেরা করার উদ্যোগ নেয় সিবিআই কর্তারা।কলকাতা পুলিশ কমিশনার হিসাবে তিনি সরকারি বাসভবনই ব্যবহার করছিলেন।সিবিআইয়ের অফিসাররা সেখানে পৌঁছালে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা তাঁদের গ্রেফতার করে।সিবিআই সদস্যদের থানায় আটক করে রাখা হয়।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  সংবিধানের ওপর কুঠারাঘাত বলে কলকাতার রাস্তায় ৭০ ঘন্টার ধরনা অবস্থানে বসেন।এরপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শিলংয়ে গিয়ে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন রাজীব কুমার।প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে সিবিআই তাঁকে জেরা করে।

পদ থেকে সরিয়ে রাজীব কুমারকে ডিআইজি -সিআইডি পদে বসানাে হয়।শেষ দফার ভােটের আগে বুধবার রাতে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন।তাঁকে পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে।তাঁকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় হাজিরা দিতে বলা হয়।তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি কাজে যােগ দিতে পারেননি,কারণ হিসাবে রাজীব জানান,রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেতে দেরি হয়েছে বলেই তিনি সময় মতাে কাজে যােগ দিতে পারেননি।