ছােট থেকে অঙ্কে তুখাের মাথা তাঁর। ইচ্ছে ছিল অঙ্ক নিয়ে লন্ডনের বিখ্যাত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরার। কিন্তু টাকার অভাবে পরা হয়নি। এবার সেখান থেকেই ডাক পেলেন আনন্দ কুমার। তবে পড়ানাের জন্য। বিহারের আনন্দের এই কৃতিত্বকে সম্মান জানাচ্ছে গােটা দেশ।
সম্প্রতি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি চিঠি পাঠানাে হয়েছে আনন্দ কুমারকে। কয়েকটি ক্লাস নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানাে হয়েছে তাঁকে। একদিন টাকার অভাবে যেখানে পড়তে যেতে পারেননি, এখন সেখানেই তিনি যাবেন পড়াতে। এটাই তাঁর সাফল্য।
বিহারের বাসিন্দা আনন্দ কুমারের ইচ্ছে ছিল কেমব্রিজে গিয়ে গবেষণা করার। নিজের চেষ্টায় একটি থিওরেম কষে সেখানে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সিলেক্টও হয়ে যান তিনি। কেমব্রিজ থেকে চলে এসেছিল চিঠি। কিন্তু যাওয়ার বিস্তর খরচ। পেশায় পােস্ট অফিসের পিয়ন বাবার পক্ষে অতটা টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। ফলে পড়ার স্বপ্ন তাঁর শেষ হয়ে যায়। ছেলেকে সাহায্য করতে না পারার অবসাদ নিয়েই মারা যান তাঁর বাবা। সেই আনন্দই এবার ডাক পেয়েছেন কেমব্রিজে পড়ানাের।
বাবা মারা যাওয়ার পর প্রথমে একটি কোচিং সেন্টারে পড়ানাে শুরু করেন আনন্দ। কিন্তু গরিব ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু করার চেষ্টা তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে আনে। তারপরে শুরু হয় তাঁর কোচিং ক্লাস সুপার থার্টি। নিজের বাড়িতে নিজের খরচায় ৩০ জন গরিব ও মেধাবী ছেলেমেয়েকে আইআইটি’তে ভর্তির কোচিং দেওয়া শুরু করেন আনন্দ। এই কাজের জন্য অনেক ঝক্কিও পােয়াতে হয়েছে তাঁকে। মূলত লড়তে হয়েছে টাকার অভাবের সঙ্গে। তাঁর বিরুদ্ধে হামলাও চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কিন্তু কেউ তাঁকে আটকাতে পারেনি। নিজের চেষ্টায় সফল করেছে তাঁর ব্রত। প্রতি বছর সেখান থেকে আইআইটিতে চান্স পায় ৩০ জন করে ছাত্রছাত্রী। রীতিমতাে পরীক্ষা দিয়েই তবে সুযােগ মেলে আনন্দ স্যারের ক্লাসে পড়ার।