ওমিক্রনের উপ প্রজাতি ‘স্টেলথ ওমিক্রন’ হানা দিয়েছে ভারতে

প্রতিকি ছবি (Photo by Johan ORDONEZ / AFP)

ঠিক যেভাবে করোনার ডবল ভ্যারিয়ান্টের নতুন নতুন শাখাপ্রশাখা ছড়িয়েছিল বিশ্বে, তেমন ভাবেই ওমিক্রনও ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। করোনার ডবল ভ্যারিয়ান্ট থেকেই এসেছিল আলফা, বিটা ও ডেল্টা প্রজাতি। এখন ওমিক্রনও তার বংশবিস্তার করতে শুরু করেছে।

তিন রকমের সাব লিনিয়েজ বা উপ-প্রজাতি জন্ম নিয়েছে ওমিক্রন থেকে, যার একটির নাম ‘স্টেলথ ওমিক্রন’। এই নয়া প্রজাতি নাকি ওমিক্রনের থেকেও দ্রুত ছড়াতে পারে। ভারত, সুইডেন, ব্রিটেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক সহ বিশ্বের ৪০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রনের এই উপ-প্রজাতি।

ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, ৩০ বার জিনের গঠন বদলে ফেলেছে এই ভ্যারিয়ান্ট। ফলে খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। শুধু তাই নয়, ভাইরাসের এই প্রজাতিতে প্রোটিনের বিন্যাস এমনভাবে বদলেছে যে রিয়েস টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট কেও ফাঁকি দিতে পারে।


কোভিড টেস্টেও ধরা পড়বে না এই স্ট্রেন। ওমিক্রনের মোট তিনটি উপ-প্রজাতি ধরা পড়েছে বিএ.১, বিএ.২ ও বিএ.৩। এই বিএ.২ প্রজাতিটিই সবচেয়ে বেশি সংক্রামক ও সুপার স্প্রেডার। ব্রিটেনে ৫৩ জনের শরীরে ধরা পড়েছে এই স্ট্রেন।

তাছাড়াও ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেনে ধরা পড়েছে করোনার এই উপ-প্রজাতি। গবেষকরা বলছেন, ভারতেও ওমিক্রনের এই সংক্রামক স্ট্রেন ছড়িয়ে পড়েছে, তাই আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে। বিএ.২ এই ভ্যারিয়ান্টেরই নাম দেওয়া হয়েছে স্টেলথ ওমিক্রন।

স্পাইক প্রোটিনে বদল হয়েছে ৩০ বার নতুন এই প্রজাতির জিনোম সিকুয়েন্স বা জিনের গঠন বিন্যাস বের করে এর নাম দেওয়া হয়েছে বিএ.২। ওমিক্রন (বি.১.১৫২৯) প্রজাতির সাব-লিনিয়েজ বা উপ-প্রজাতি।

ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, নতুন এই প্রজাতিতে অন্তত ৩০টি মিউটেশন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যার মধ্যে স্পাইক প্রোটিনেই ৩০ বার অ্যামাইনো অ্যাসিডের কোড বদলে গেছে। মানুষের শরীরে এই প্রজাতি খুব দ্রুত ছড়াতে পারে বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

কোভিডের এই ‘ভ্যারিয়ান্টও’ উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। গত বছর মার্চ থেকে করোনার যে প্রজাতি ভারতে ছড়াতে শুরু করেছিল তা এখন অনেক বদলে গিয়েছে।

সুপার-স্প্রেডার হয়ে উঠেছে, মানে অনেক দ্রুত মানুষের শরীরে ঢুকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সার্স-কভ-২ হল আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) ভাইরাস। এর শরীর যে প্রোটিন দিয়ে তৈরি তার মধ্যেই নিরন্তর বদল হচ্ছে।

এই প্রোটিন আবার অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে সাজানো। ভাইরাস এই অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলোর কোড ইচ্ছামতো বদলে দিচ্ছে। কখনও একেবারে ডিলিট করে দিচ্ছে। এইভাবে বদলের একটা চেইন তৈরি হয়েছে। আর এই এই রূপ বদলের কারণেই নতুন নতুন প্রজাতির দেখা মিলতে শুরু করেছে।