সংসদ-কমিটির শুনানিতে সুপ্রিম-স্থগিতাদেশ
দিল্লি, ১৯ ফেব্রুয়ারি– গত বুধবার সন্দেশখালির অভিযানে সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের স্বাধিকার লঙ্ঘনের চেষ্টার অভিযোগের পাল্টা রাজ্যের তরফে মুখ্যসচিব সুপ্রিম কোর্টে সংসদীয় তলবকে চ্যালেঞ্জ যে পিটিশন ফাইল করে তাতে আপাতত স্বস্তিতে রাজ্য৷ উক্ত মামলায় সংসদ-কমিটির শুনানিতে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট৷
এদিনের প্রত্যেকের বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, আপাতভাবে ৪ সপ্তাহ সময় দেওয়া হল৷ সংসদীয় কমিটির তলবে আপাতত স্থগিতাদেশ দিচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট৷ চার সপ্তাহের মধ্যে সব পক্ষ অর্থাৎ লোকসভার সেক্রেটারির বক্তব্য পাশাপাশি, যারা অভিযোগ করেছে অর্থাৎ রাজ্যের তরফ থেকেও বক্তব্য দিতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত৷
সন্দেশখালিতে সুকান্ত-ইসু্যতে সংসদীয় কমিটির তলবকে চ্যালেঞ্জ করা মামলায় রাজ্যের পালেই সুপ্রিম কোর্টে রায়৷ সোমবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সব পক্ষকে নোটিস ইসু্য করার নির্দেশ দিয়েছে৷
আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে হবে৷ উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্দেশখালির অভিযান ছিল বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের৷ কিন্ত্ত সেখানে যাওয়ার পথে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় পুলিশি বাধার মুখে পডে়ন সুকান্ত মজুমদার৷ রীতিমতো রাজ্য পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় তাঁর৷ গাডি় থেকে পডে় যান তিনি৷ সাংসদ অসুস্থ হয়ে পডে়ন৷ প্রথমে তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়৷ পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে৷ আর এরপরই সুকান্ত তরফে অভিযোগ ওঠে, একজন সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও, তার ‘প্রিভিলেজে’ হস্তক্ষেপ করেছে পুলিশ৷ অভিযোগ আরও ওঠে, তাঁকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়৷ তিনি আহত হওয়ার পর তাঁকে দেরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷
এই প্রত্যেকটি বিষয় একজন সাংসদের স্বাধিকারকে লঙ্ঘন করে বলে অভিযোগ ওঠে৷ এই অভিযোগ তুলে লোকসভার সচিবালয় থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে একটি চিঠি জমা পডে়৷ চিঠিতে বলা হয়, সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের স্বাধিকার লঙ্ঘনের চেষ্টা হয়েছে৷ এই মর্মে রাজ্যের ডিজিপি রাজীব কুমার-সহ তিন পুলিশকর্তা তলব করা হয়৷ ডেকে পাঠানো হয় রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক এবং উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদীকে৷ ৯ তারিখ প্রিভিলেজ কমিটি অর্থাৎ সংসদীয় কমিটির বৈঠক ছিল৷ কিন্ত্ত তাঁরা এদিন কেউই আসেননি৷ পাল্টা রাজ্যের তরফে মুখ্যসচিব সুপ্রিম কোর্টে এই সংসদীয় তলবকে চ্যালেঞ্জ করে একটি পিটিশন ফাইল করে৷
রাজ্য সরকারর তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল ও আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙভিও সওয়াল-জবাব করেন৷ তাদের তরফে জরুরি শুনানির আর্জিও জানানো হয়৷ সেই শুনানিতেই রাজ্যের মুখ্যসচিবের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, “সন্দেশখালির ঘটনা একটা রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল৷ সেখানে একজন সাংসদের অধিকার ভঙ্গের কোথাও কোনও প্রশ্ন নেই৷ ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করা হচ্ছিল৷” তিনি আরও সওয়াল করেন, ‘যে অভিযোগ করা হচ্ছে, অর্থাৎ সুকান্ত মজুমদারকে ধাক্কা দিয়ে গাডি় থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে, তার প্রমাণ ভিডিওতে নেই৷ বরং ভিডিয়োতে যে অ্যাভিডেন্স পাওয়া যাচ্ছে, সুকান্ত মজুমদারই দলের এক কর্মী তাঁকে টেনে নামান৷ তাঁর ধাক্কাতেই কার্যত সুকান্ত মজুমদার পডে় গিয়েছিলেন৷’
আইনজীবী কপিল সিব্বলের বক্তব্য, ‘যেদিন ঘটনা ঘটেছিল, ঘটনাস্থলে মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, এসপি কেউই ছিলেন না৷ তাঁদের কেন এক্ষেত্রে তলব করা হয়েছে৷ এই বিষয়টি কোনওভাবেই প্রিভিলেজের আওতায় পডে় না৷’