আজ, বুধবার সকালে কড়া নিরাপত্তার সঙ্গে শুরু হল ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোট গ্রহণ। এছাড়া কেরালার ওয়েনাড় সংসদীয় আসন এবং পশ্চিমবঙ্গ সহ ১১ টি রাজ্যের ৩৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন শুরু হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট, জেএমএম নেতৃত্বাধীন জোটকে উৎখাতের লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছে। যেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেন এবং কংগ্রেস নেতা অজয় কুমারের মতো মূল প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ঝাড়খণ্ডে ১৩ এবং ২০ নভেম্বর দুটি পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, প্রথম পর্যায়ে তেতাল্লিশটি আসনে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা ওয়েনাড় থেকে তাঁর নির্বাচনের ময়দানে অভিষেক হল। যে আসনটি আগে তাঁর দাদা রাহুল গান্ধী জিতেছিলেন। চলতি বছরের গোড়ার দিকে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধী রায়বরেলি ও ওয়েনার দুটি আসনই জেতার পর রাহুল পারিবারিক শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রায়বরেলির আসনটি ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এবারের উপনির্বাচনে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কার জন্য ওয়েনাড়-এ প্রচার করেছেন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর বিরুদ্ধে লড়ছেন বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের (এলডিএফ) সত্যান মোকেরি এবং বিজেপির নব্যা হরিদাস। ত্রিশূর জেলার চেলক্কারা বিধানসভা আসনেও বুধবার ভোট হবে।
সকাল ৭টায় শুরু হওয়া ভোট গ্রহণের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যা বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। ৩১টি আসনের ৯৫০টি সংবেদনশীল বুথে বিকেল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হবে। রাঁচি বিধানসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার উৎকর্ষ কুমার আগেই জানিয়েছিলেন, সকাল ৫:৩০ মিনিটে মক পোল হওয়ার পর ভোটগ্রহণ শুরু হবে। বুধবার সেই মতো নির্দিষ্ট সময়ে মক পোলের পর ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
তিনি জানান, ‘সমস্ত ভোটকেন্দ্রে পানীয় জল, শৌচাগার এবং ওয়েব-কাস্টিং সহ সমস্ত মৌলিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা ও সি. এ. পি. এফ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সব নিয়ম-কানুন মেনেই নির্বাচন পর্ব চলছে।’
প্রথম পর্যায়ের মূল প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি প্রার্থী চম্পাই সোরেন। যিনি সেরাইকেল্লা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পূর্ব জামশেদপুরে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ওড়িশার রাজ্যপাল রঘুবর দাসের পুত্রবধূ পূর্ণিমা দাস সাহুর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কংগ্রেস নেতা অজয় কুমার। জামশেদপুর পশ্চিমে, কংগ্রেস নেতা বান্না গুপ্ত, জেডি (ইউ) নেতা সরযু রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যিনি আগের নির্বাচনে রঘুবর দাসকে পরাজিত করেছিলেন। জগন্নাথপুরে কংগ্রেসের সোনা রাম সিঙ্কুর বিরুদ্ধে লড়ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মধু কোড়ার স্ত্রী গীতা কোড়া। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) রাঁচি থেকে রাজ্যসভার বর্তমান সাংসদ মহুয়া মাজিকে প্রার্থী করেছে।
ঝাড়খণ্ডের বাকি ৩৮টি আসনে ভোট হবে ২০ নভেম্বর এবং ভোট গণনা হবে ২৩ নভেম্বর। পূর্ববর্তী বিধানসভা নির্বাচনে জেএমএম ৩০টি, বিজেপি ২৫টি এবং কংগ্রেস ১৬টি আসন পেয়েছিল। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া রক্ষার জন্য কৌশলগত কারণে বিতর্কিত ও উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ২০০টিরও বেশি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৭৩ জন মহিলা সহ মোট ৬৮৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া ১১টি রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনে ৩৩টি আসনের মধ্যে রাজস্থানের ৭টি, পশ্চিমবঙ্গের ৬টি এবং অসমের ৫টি আসন রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ৬টি বিধানসভা আসন হল নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর, তালডাংরা, সিতাই এবং মাদারিহাট। অসমের সমগুড়ি, বেহালি, বঙ্গাইগাঁও, সিডলি ও ধোলাই আসনে ভোট হবে। ২০ নভেম্বর বাকি আসনগুলির সঙ্গে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।