দিল্লি, ১৫ মার্চ– আসন্ন নির্বাচনে এবার গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে সন্দেশখালি৷ সেই সন্দেশখালি এবার রাষ্ট্রপতির দরবারে৷ শুক্রবার সন্দেশখালির ‘নির্যাতিতা’রা এবার তাদের অভিযোগ নিয়ে দরবার করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে৷ রাইসিনা হিলসে এদিন হাজির হন সন্দেশখালির ১১ জন বাসিন্দা৷ তাঁদের মধ্যে পাঁচজন মহিলা এবং বাকিরা পুরুষ৷ রাষ্ট্রপতি কিছুক্ষণ তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন৷ সন্দেশখালির ‘নির্যাতিতা’-দের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শুনে দুঃখপ্রকাশ করেন মুর্মু৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নির্যাতিতাদের সাক্ষাৎ, যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন সকলে৷
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গ সফরের সময় বারাসতের সভা শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন সন্দেশখালির বেশ কয়েকজন মহিলা৷ নারী দিবসের আগে মমতার সভামঞ্চেও দেখা গিয়েছে সন্দেশখালির মহিলাকে৷
এদিন রাষ্ট্রপতি ভবনে সন্দেশখালির বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা যায় সেন্টার ফর এসসি/এসটি সাপোর্ট অ্যান্ড রিসার্চের ডিরেক্টর ডঃ পার্থ বিশ্বাসকে৷ পার্থ বিশ্বাস জানান, “সন্দেশখালির মোট ১১ জন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন৷ তাঁদের মধ্যে ৫ জন মহিলা এবং ৬ জন পুরুষ৷ সরাসরি নির্যাতিতদের মুখ থেকেই যাতে রাষ্ট্রপতি জানতে পারেন, তাই সন্দেশখালির মহিলা এবং নির্যাতিত পুরুষদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে আসি৷ রাষ্ট্রপতি তাঁদের কথা শুনেছেন৷ সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে দুঃখও প্রকাশ করেছেন৷ সহানুভূতিও প্রকাশ করেছেন তিনি৷”
রাজ্য-দেশ তোলপাড় করা সন্দেশখালির ঘটনাটির সূত্রপাত গত ৫ জানুয়ারি, সন্দেশখালির সরবেডি়য়ার আকুঞ্জপাড়ায় শেখ শাহজাহানের বাডি়তে ইডির হানার মাধ্যমে৷ ইডি শেখ শাহজাহানের বাড়িতে যেতেই তাদের দিকে ধেয়ে আসে শাহজাহানের অনুগামীরা৷ আধিকারিকদের মারধর থেকে শুরু করে কেড়ে নেওয়া হয় তাদের সঙ্গে থাকা ল্যাপটপ, সরকারি জিনিপত্র-কাগজপত্রও৷ হামলায় জখম হন তিন আধিকারিক৷ ভাঙচুর করা হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গাডি়তেও৷ এই ঘটনার পর থেকেই এলাকাছাড়া ছিলেন সন্দেশখালির বেতাজ বাদশাহ শাহজাহান৷ এমনকী শাহজাহানকে গ্রেফতারির নির্দেশ দেওয়া হয় আদালত তরফেও৷ এদিকে, ফেরার শাহজাহানকে গ্রেপ্তারির দাবিতে পথে নামেন মহিলারা৷ জ্বলে ওঠে গ্রামের পর গ্রাম৷ পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে যায় যে দফায় দফায় ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন৷
সেই সময়ই বিক্ষোভকারী মহিলারা জানান, শাহজাহান ওই এলাকার ‘ত্রাস’৷ এরপরই কেচো খুড়তে সাপের মতো বেরিয়ে আসে শাহজাহানের একের পর কীর্তি৷ শাহজাহানের বিরুদ্ধে বিঘার পর বিঘা জমি ও ভেডি় দখলের অভিযোগ উঠেছে৷ তেমনই আবার রয়েছে নারী নির্যাতনের অভিযোগও৷ শেষে সন্দেশখালিতে ইডি হামলার প্রায় ৫৫ দিন পর গ্রেপ্তার হন শাহজাহান৷ গ্রামগুলিতে অশান্তির মাঝে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, জাতীয় এসসি এসটি কমিশনের প্রতিনিধিরা সন্দেশখালি যান৷ রাষ্ট্রপতির কাছে রিপোর্টও জমা দেন৷ এবার রাষ্ট্রপতির দরবারে সন্দেশখালির মহিলারা৷