রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য এড়িয়ে চলার পরামর্শ একাধিকবার দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। বিশেষত লোকসভা নির্বাচনে স্মৃতি ইরানির পরাজয়ের পর কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন দলীয় সমর্থক সোসাল মিডিয়ায় তাঁকে নিশানা করে কটুক্তি করেন। সেই সময় টুইট করে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার জন্য জনগণের কাছে আবেদন জানান রাহুল গান্ধি। কিন্তু সেই সৌজন্যের রাজনীতির তোয়াক্কা না করে ফের রাহুলকে বিঁধলেন স্মৃতি। রাহুলের রাজনীতির ধরন নিয়ে এবার মন্তব্য করলেন আমেঠীর পরাজিত বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। রাহুলকে নিশানা করে তাঁর মন্তব্য, কংগ্রেস নেতা মনে করছেন তিনি জয়ের স্বাদ পেয়ে গিয়েছেন এবং এখন এক ভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করছেন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে রাহুল সম্পর্কে স্মৃতি বলেন, “যখন তিনি জাতপাতের প্রসঙ্গে কথা বলেন, যখন তিনি সংসদে সাদা গেঞ্জি পরে আসেন, তিনি খুব সচেতন ভাবে জানেন যুব সমাজকে কী বার্তা দিতে চান।”
স্মৃতি ইরানির কথায়, রাহুল যেভাবে শাসক পক্ষকে আক্রমণ করেন, তাকে অবহেলার চোখে দেখা উচিত নয়। স্মৃতির বক্তব্য, “তিনি কী করতে পারেন, তা নিয়ে আমাদের ভুল ধারণা থাকা উচিত নয়। তাঁর রাজনীতির এই কৌশলকে আপনি ভাল , খারাপ বা শিশুসুলভ মনে করতে পারেন। কিন্তু এটি একটি ভিন্ন ধরনের রাজনীতি।”
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির মতে, জাতপাতের প্রসঙ্গ তুলে জনগণের মনে ঢেউ তুলতে চাইছেন রাহুল গান্ধি। জাতগণনা দেশের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছিলেন রাহুল গান্ধি। এর সমালোচনা করে স্মৃতি বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের গুরুত্ব বোঝাতেই এই পথ নেন রাহুল। স্মৃতি ইরানির বক্তব্য, “রাহুল এ সব বলে খবরে থাকতে চান।”
স্মৃতি ইরানি রাহুল গান্ধিতে নিশানা করে আরও বলেন, লোকসভা নির্বাচনের সময় রাহুল গান্ধি বেশ কিছু মন্দিরে ঘুরেছেন। কিন্তু সেই পন্থাও বিশেষ কাজে আসেনি কংগ্রেসের। সেটা বুঝতে পেরেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি এই নতুন রাজনৈতিক কৌশল নিয়েছেন বলে দাবি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির। তাঁর মতে, এই মন্দিরে যাওয়ার কৌশল মানুষকে ঠকানো ছাড়া আর কিছুই নয়।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাহুল গান্ধি কেন সুন্দরী প্রতিযোগিতায় দলিত, তফসিলি জাতি ও জনজাতির প্রতিনিধিত্ব নেই,, প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, “আমি সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের তালিকায় দেখছিলাম কোনও দলিত বা আদিবাসী মহিলা রয়েছেন কি না। কিন্তু সেখানে কোনও দলিত, আদিবাসী, তফসিলি জাতি, তফসিলি জনজাতি কিংবা অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মহিলা ছিলেন না।”
২০২৪ সালের লোকসভআ নির্বাচনে আমেঠিতে কংগ্রেস নেতা কিশোরী লাল শর্মার কাছে দেড় লক্ষেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন স্মৃতি। এরপর সোসাল মিডিয়ায় স্মৃতিকে উদ্দেশ্য করে কটাক্ষ, বিদ্রুপ শুরু হয়ে যায়। সরকারি বাংলো ছেড়ে দেওয়ার পর এই কটাক্ষবাণ আরও বেড়ে যায়। সেই সময় স্মৃতির হয়ে রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিচয় রাখেন রাহুল গান্ধি। কিন্তু তার পরেও রাহপলকে আক্রমণ করতে ছাড়লেন না প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।