আজ শনিবার, ঠিক ৫০ বছর আগে এক অভিনব পরীক্ষণের মাধ্যমে ইতিহাসের খাতায় নাম তোলে ভারত৷ ১৮ মে, ১৯৭৪ সালের সেই পরীক্ষণের নাম ছিল ‘স্মাইলিং বুদ্ধ’৷ সেই পরীক্ষাটি ছিল বিশ্বে নিজেকে শক্তিধর প্রমাণিত করতে পরমাণু সফল পরীক্ষণ৷ এই দিনটিতেই রাজস্থানের পোখরানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির নেতৃত্বে প্রথম সফল পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছিল ভারত৷ তাই একে পোখরান-১ বলা হয়ে থাকে৷
প্রায় গোপনতম এই পরমাণু পরীক্ষার পর ভারত আমেরিকা, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং চিনের পর রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য দেশের বাইরে প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় পরিচিতি লাভ করে৷ কিন্ত্ত, তৎকালীন ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের ডিরেক্টর রাজা রামান্নার বিবৃতিতে ঘরে-বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে পডে় ইন্দিরা সরকার৷ রামান্না বলেন, পোখরানে যে পরীক্ষা হয়েছে, তা পরমাণু বোমা ছিল৷ আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বিস্ফোরণ মানে বিস্ফোরণ৷ বন্দুকের অর্থ বন্দুকই হয়৷ তা সে কারও বুক লক্ষ্য করে চালানো হোক কিংবা মাটির দিকে তাক করে চালানো দুটোই এক৷ এই পরীক্ষা কেবলমাত্র শান্তি বজায় রাখার জন্য নয়৷
পরবর্তীকালে প্রাক্তন বিজেপি প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির আমলে আরও পরমাণু পরীক্ষা হয়৷ তাই আজকের দিনে একে পোখরান-১ পরমাণু পরীক্ষা নাম দেওয়া হয়েছে৷ ভারতীয় সেনা রাজস্থানের পোখরানে ১০৭ মিটার গভীরে এই পরীক্ষা চালায়৷ ঘটনাচক্রে সেদিনটি ছিল বুদ্ধজয়ন্তী৷ সফলভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তৎকালীন ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের ডিরেক্টর রাজা রামান্না এক বার্তায় ইন্দিরা গান্ধিকে বলেছিলেন, অবশেষে বুদ্ধ হেসে উঠলেন৷
দেশের বিদেশ মন্ত্রক আন্তর্জাতিক দরবারে ঘোষণা করল, এই পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ পরমাণু গবেষণার অঙ্গ৷ বিশ্ব রাজনীতিতে সেই সময়টা ছিল ঠান্ডাযুদ্ধের৷ পশ্চিমী ও এশীয় দেশগুলি আমেরিকা ও সোভিয়েতপন্থায় দুভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল৷ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কায় পরমাণু অস্ত্র নিষ্ক্রিয় করার বিষয়ে জোর আলোচনা চলছে দুনিয়া জুডে়৷ ভারতের এই পরীক্ষার পরেই পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী গডে় ওঠে৷ এতে যোগ দেয় ৪৮টি দেশ৷ অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধর পরেই দেশে ও বিদেশেও ইন্দিরা গান্ধির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়৷