ব্রাতিস্লাভা, ১৬ মে – আততায়ীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো। বুধবার সে দেশের রাজধানী ব্রাতিস্লাভার উত্তর-পূর্বে হ্যান্ডলোভা শহরে ‘হাউস অফ কালচার’ ভবনে তাঁকে লক্ষ্য করে একাধিকবার গুলি চালানো হয়। স্লোভাকিয়ার টিভি চ্যানেল ‘টিএ ৩’-এর খবর , প্রধানমন্ত্রী ফিকোর দেহে চারটি গুলি লাগে। একটি গুলি সরাসরি তাঁর পাকস্থলীতে লাগে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে শেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে কয়েকঘন্টার অস্ত্রোপচারের পর তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। তবে তিনি বিপন্মুক্ত কিনা তা বলা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বুধবার রাজধানী থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দূরে শহরের একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ‘হাউস অফ কালচার’-এর বাইরেস্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে লক্ষ্য করে পরপর চারটি গুলি চালানো হয়। ফিকো দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক সেরে সেখান থেকে বেরোচ্ছিলেন বলে সরকারি তরফে জানানো হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট কালিনাক বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের বাইরে সাংবাদিকদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক পরিস্থিতির কথা জানান।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় সকাল ৭টা নাগাদ একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। সেখানে দেখা গেছে, গুলি লাগার পরে পেটে হাত দিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফিকো। নিরাপত্তারক্ষীরা ফিকোকে ধরে ধরে কালো লিমোজ়িন গাড়িতে তুলে দ্রুত হাসপাতালের দিকে রওনা দেন। পূর্ব ইউরোপের সংবাদমাধ্যম ‘নেক্সটা’ তাদের এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী ফিকোকে উদ্ধার করে গাড়িতে তোলার ভিডিওটি পোস্ট করে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর মাথাতেও গুলি লাগে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট কালিনাক জানান, প্রধানমন্ত্রী ফিকোর একটি অস্ত্রোপচার এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাঁর অবস্থা\খুবই সঙ্কটজনক বলে জানান তিনি। ফিকোর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার কথা শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ভন দের লেয়েন।
এদিকে স্লোভাকিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতুস সুজাক এস্টক জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার চেষ্টার পিছনে একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। কালিনাকও বলেন, এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল।
স্লোভাকিয়ার চার বারের প্রধানমন্ত্রী ফিকোর উপরে গুলি চালানোর ঘটনায় স্লোভানিয়ার ৭১ বছর বয়সী কবি জুরাজ চিন্তুলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অভিযুক্ত জানিয়েছেন, ফিকোর মিডিয়া সংক্রান্ত নীতি নিয়ে রাগ ছিল তাঁর।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন পরে ইউরোপে কোনও রাষ্ট্রনেতা এমন প্রাণঘাতী হামলার শিকার হলেন। ১৯৮৬ সালে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ওলফ পালমেকে রাজধানী স্টকহলমের রাস্তায় গুলি করে খুন করা হয়েছিল। ২০২২ সালের জুলাই মাসে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে একটি জনসভার মঞ্চে গুলি করে খুন করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সকালে এই হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর উপর গুলি চালানোর খবরে গভীরভাবে মর্মাহত। আমি এই কাপুরুষোচিত ও ঘৃণ্য কাজের তীব্র নিন্দা করছি। প্রধানমন্ত্রী ফিকোর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। ভারত স্লোভাকিয়ার জনগণের পাশে আছে। ‘