কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরােধিতায় সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিন অনুপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে সমর্থন জানিয়ে একই সিদ্ধান্তের পথে হাঁটল ১৬ টি বিরােধী দল। সকলের তরফে যৌথ বিবৃতি দিয়ে সে কথা জানিয়ে দিলেন কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ। পাশে দাঁড়াল ন্যাশনাল কনফারেন্স, শিব সেনা, ডিএমকে, সিপিএম সকলেই।
প্রসঙ্গত, সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে শুক্রবার। কিন্তু কৃষি আইনের বিরােধিতায় সেই বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা বয়কট করবে তৃণমুল। সম্প্রতি দেশের ১৬ টি বিরােধী দল একযােগে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের তরফে প্রকাশ করা হয়েছে একটি লিখিত বিবৃতিও।
সেই বিবৃতিতে জানানাে হয়েছে, কৃষি আইন নিয়ে এখনও পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১৫৫ জন কৃষক প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে মারা গিয়েছেন। দেশের কৃষকেরা কেন্দ্রীয় সরকারের আনা কৃষি আইন কিছুতেই মানতে চান না। কিন্তু সরকার একরােখাভাবে কৃষকদের আন্দোলনকে দমন করার যে নীতি গ্রহণ করেছ তা নিন্দনীয়।
রাজধানী দিল্লিতে ২৬ জানুয়ারি কৃষকদের আন্দোলনকে যেভাবে বিছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে জুড়ে দেখানো চেষ্টা হয়েছে, তা কোনও চক্রান্তের চেয়ে কম নয়। এমন সব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ১৬ টি রাজনৈতিক দল এ বারের বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনই অনুপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ওই ১৬ দলের তরফে যে বিবৃতি প্রকাশ্যে এসেছে তাতে নাম রয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূলেরও। প্রত্যেক দলের তরফে তাদের লােকসভা ও রাজ্যসভার দলনেতাদের নাম রয়েছে ওই বৃিতিতে। তৃণমূলের তরফে নাম রয়েছে লােকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের।
তৃণমূল ছাড়াও কংগ্রেস, এনসিপি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, ডিএমকে, শিবসেনা, সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, সিপিএম, সিপিআই, আইইউ এমএল, আরএসপি, পিডিপি, এমডিএমকে, কেরল কংগ্রেস (এম) ও এআইইউডিএফের মতাে রাজনৈতিক দলগুলিও রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা বয়কট করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিধানসভা অধিবেশন শেষে অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সংসদের প্রথম দিন অনুপস্থিত থাকবে তৃণমূল। তিনিই জানান, আরও ১৬ টি দলও একই সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে বলে শুনেছেন।
এরপরই কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ জানান, আগের অধিবেশনে বিরােধীদের মতামত না নিয়ে একক সিদ্ধান্তেই কৃষি বিল পাশ করিয়ে আইনে পরিণত করেছে কেন্দ্র সরকারপক্ষ। তারই প্রতিবাদে চলতি অধিবেশনের প্রথম দিন বয়কট করছে বিরােধী দলগুলি।
নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির ভাষণ দিয়ে সূচনা হয় সংসদ অধিবেশনের। এবারও ২৯ জানুয়ারি, অর্থাৎ সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনও রয়েছে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণ। কিন্তু তাতে থাকবেন না তৃণমূল সাংসদরা, থাকবেন না আরও ১৬ টি দলের জনপ্রতিনিধিরাও।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট যতই এগিয়ে আসছে ততই সঙঘাত তীব্র হচেছ তৃণমূল বিজেপির। সেই সংঘাতের প্রভাব পড়েছে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কেও। এ বারের বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বক্তৃতায় অংশ না নিয়ে কৃষক আন্দোলনের পক্ষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে নরেন্দ্র মােদির সরকারকে হুঁশিয়ারি দিতে চায় তৃণমূল।