বামেদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে দিশাহীন সীতারাম ইয়েচুরি

খাদের ধারে দাঁড়ানো দলকে, কীভাবে ঘুরে দাঁড় করাতে হবে? তার কোনও সঠিক রাস্তা বাতলে দিতে পারলেন না-সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

২০১১ সালেই বাম জমানার পতন ঘটেছিল। তার পর থেকে টিম টিম করে জ্বলছিল দলটি।

এরপর গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় বামেরা। একটি বাদে সব কটি আসন হাতছাড়া হয়ে যায়।


এরই মধ্যে মঙ্গলবার সিপিআইএমের দলীয় মুখোপত্রে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়।

সেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি আলোচনা করলেও, মরা গাঙে জোয়ার আনার কোনও হদিশ দিতে পারেননি ইয়েচুরি।

অর্থাৎ কীভাবে মিহিয়ে পড়া দলে প্রাণ সঞ্চার করা যায়, তার কোনও পোক্ত পথ দেখাতে পারেননি তিনি।

এই সাক্ষাৎকারে ইয়েচুরি শুধু উগ্র হিন্দুত্বকে রুখতে অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলোকে সংঘবদ্ধ হওয়ার কথা বলেছেন।

তিনি অভিযোগ করেন যে, মোদি সরকার শুধু সাম্প্রদায়িকতার বিষই ছড়াচ্ছেনা-উপরন্তু কর্পোরেটগুলোকে লুঠে নিচ্ছে।

সব কিছুর আলোচনা করলেও বিজেপির দুরমুশ করা রাজনীতির মোকাবিলা কীভাবে করতে হবে, সেই বিষয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি তিনি।

এমনকী, দেশের অবিজেপি দলগুলোকেও কোনও গুরুত্ব দিতে চাননি তিনি। তাঁদের ভূমিকাকে এড়িয়ে গিয়েছেন ইয়েচুরি।

তিনি শুধু বলেন, ‘উগ্র হিন্দুত্বের আক্রমণের মোকাবিলা করতে, সর্বোচ্চ ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

এটাই দলের ভূমিকা হবে। সেজন্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলোকে একত্র করতে হবে।’ এখানে শুধু রাজনৈতিক দলগুলোকেই ইঙ্গিত করেননি তিনি।

বরং বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, ঐক্যে ইচ্ছুক সব শক্তির উদ্দেশ্যে বলেছেন তিনি। এরাজ্যে যখন বামেরা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে, ওদিকে বিধানসভা বামশুণ্য।

তখন রাজ্যে তো নয়ই বরং গোটা দেশের বামেদের ঘুরে দাঁড়ানোর দিকে আলোকপাত করতে পারেননি তিনি উল্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিজেপি বিরোধিতাকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন তিনি।

অন্য দিকে, সান্তনা হিসেবে বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে বামেদের দ্বিতীয় হওয়াকে শিখণ্ডী হিসাবে খাঁড়া করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চেয়েছেন তিনি।

কিন্তু সুচারুভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন আসানসোলে বামেদের দুরবস্থার বিষয়টি। সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, ‘তৃণমূল যে পদ্ধতি ও ইস্যু ব্যবহার করছে, তাতে শক্তিশালী হচ্ছে বিজেপিই।

অন্যদিকে, বামপন্থীরাই বিকল্প বলায়, ইয়েচুরির যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।’