বেঙ্গালুরু, ১৮ মে– রাজনীতির অর্থ ‘রাজার নীতি’৷ যে নীতিতে রাজা শুধু নিজের রাজপাটই চালান না নিজের অধীনস্থ থেকে বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন৷ তবে ভারতের না আছে সেই রাজযুগ আর না আছে সেই রাজনীতি৷ এখন যা অবস্থা তাতে রাজনীতির অর্থ সাম-দাম-দন্ড-ভেদ, যেভাবেই হোক বিরোধীকে দমন করা৷ ক্ষমতা কুক্ষিগত করা৷ তাতে যদি বিরোধীপক্ষকে যৌন কেলেঙ্কারিতে ফাঁসাতে হয় তাও আচ্ছা৷ সেই উদাহরণই তো দিলেন কংগ্রেসের দাপুটে নেতা তথা কর্ণাটেকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার৷
তবে অভিযোগ করেই থেমে থাকেন নি দেবরাজ৷ তাঁর দাবি, ‘আমার কাছে এমন অডিও টেপ আছে যা কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার ফেলে দেবে৷ শিবকুমারের সমস্ত ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দেবেন৷ মুক্তি পেয়েই নাকি তিনি সেসব ‘অকাট্য প্রমাণ’ প্রকাশ করবেন৷
তবে ডি কে শিবকুমারের বিরুদ্ধে যাকে যৌন কেলেঙ্কারিতে ফাঁসানোর অভিযোগ করা হয়েছে তিনি কিন্তু যে কেউ নন, স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ কর্ণাটকের কংগ্রেসের উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের বিরুদ্ধে এমনটাই দাবি করেছেন জেলবন্দি বিজেপি নেতা দেবরাজে গৌড়া৷ শুধু তাই নয়, যৌন হেনস্তার অভিযোগে ধৃত গৌড়ার কথায়, জেডি (এস) প্রধান কুমারস্বামীর রাজনৈতিক জীবন শেষ করতে নীল নকশা তৈরি করেছেন শিবকুমার৷ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়ার নাতি প্রজ্বল রেভান্নার যৌন নির্যাতনের ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে দেবরাজে গৌড়ার বিরুদ্ধে৷ রয়েছে যৌন হেনস্তার মামলাও৷ ৩৬ বছর বয়সি এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১১ মে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ শুক্রবার শুনানি শেষে তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠায় আদালত৷ এদিন পুলিশ ভ্যানে ওঠার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বোমা ফাটান তিনি৷ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর ষড়যন্ত্র করেছেন শিবকুমার৷
শুধু কি ষড়যন্ত্র, সেই যড়যন্ত্র বাস্তবে ফলাতে মিথ্যা বলে মোদিকে বদনাম করার জন্য দেবরাজকে নাকি শিবকুমার ১০০ কোটি টাকার টোপও দিয়েছিলেন৷ এ বিষয়ে দেবরাজের অভিযোগ, ‘আমাকে যেভাবেই হোক প্রধানমন্ত্রী মোদিকে যৌন কেলেঙ্কারিতে ফাঁসানোর জন্য টাকার টোপ দেওয়া হলে আমি তা মেনে নিইনি৷ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর ক্যারিয়ার শেষ করতেও উঠেপডে় লেগেছেন শিবকুমার৷”
উল্লেখ্য, কর্ণাটকে হাতে হাত মিলিয়ে লোকসভা ভোটে লড়ছে বিজেপি-জেডি (এস)৷ বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ কর্ণাটকে ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের মধ্যে বিস্তর প্রভাব রয়েছে জেডি (এস)-এর৷ লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্কও বড় ভরসা বিজেপির৷ এছাড়া, মহিলা ভোটারদের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুনামিও রয়েছে৷ এহেন রসায়নে গতবারের মতোই কর্ণাটকে দাপট বজায় রাখতে চাইছে এনডিএ৷ তবে রেভান্নার যৌন নির্যাতন মামলায় বড় ধাক্কা খেয়েছে তারা৷ ‘মা-বেটির সম্মান বাঁচাতে’ জোর লড়াই শুরু করেছে কংগ্রেস৷ ফলে বিজেপির মহিলা ভোটব্যাঙ্কে একটি ধস নামার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷