সরকার গঠনের জন্যে দাবি জানাবে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট। দিল্লিতে অনেকগুলি বৈঠকের পর একমত হয়েছে ওই তিনদল। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ওইদিনই মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালকে তিনদলের জয়ী বিধায়কদের স্বাক্ষরিত চিঠি জমা দেবে তাঁরা। জোট চুড়ান্ত করতে মুম্বইয়ের শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেসের একটি যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে মূলত সরকারে ক্ষমতা বণ্টন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলােচনা হবে। মনে করা হচ্ছে ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারও।
সূত্রের খবর, ‘সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে রবিবার বা সােমবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে’। জানা গেছে কংগ্রেসের হয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী নেতরা বৃহস্পতিবার সকালেই দলনেত্রী সােনিয়া গান্ধি বাসভবনে গিয়ে বৈঠক করেছেন। সুত্র বলছে যে সােনিয়া গান্ধি শিবসেনার সঙ্গে এই জোটের বিষয়ে নিমরাজি থাকলেও কংগ্রেসের কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে তাঁকে মহারাষ্ট্রে ওই জোট গঠনের ক্ষেত্রে ‘অগ্রসর হওয়ার’ পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল এবং বলা হয়েছে যে ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বৃহত্তর শত্রু হল বিজেপি’।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে কংগ্রেস সভানেত্রী সােনিয়া গান্ধির বাড়িতে বৈঠকে বসে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে প্রবীণ কংগ্রেস নেতারা আলােচনা করেন। বুধবার শােনা গিয়েছিল, বৃহস্পতিবারই শিবসেনাকে সমর্থন করা নিয়ে চড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস। বাস্তবে এদিনও সােনিয়ার দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের শেষে প্রবীণ নেতা কে সি বেণুগােপাল বলেন, আমার মনে হয়, শুক্রবার মহারাষ্ট্র নিয়ে একটা চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বুধবার ‘মারাঠা স্ট্রংম্যান’ শরদ পাওয়ারের বাড়িতে কংগ্রেস প্রতিনিধিদের সঙ্গে এনসিপি’র বৈঠক হয়। তারপরে কংগ্রেস নেতারা বলেন, সম্ভাব্য জোটের কয়েকটি বিষয় নিয়ে এখনও আলােচনা করতে হবে। সাংবাদিক বৈঠকে এনসিপি নেতা নবাব মালিক বলেন, ‘শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে মহারাষ্ট্রে কোনও সরকার গঠিত হতে পারে না’। সাংবাদিক বৈঠকের সময় নবাব মালিকের পাশে ছিলেন কংগ্রেসের পৃথ্বীরাজ চৌহান। তিনি শুধু বলেন, ‘আলােচনা চলবে। চুড়ান্ত আলােচনার জন্য শিবসেনা নেতারা যাবেন দিল্লিতে’। একটি সুত্রে খবর , তিন দল একটি অভিন্ন নুনতম কর্মসুচি স্থির করেছে। কিন্তু কিভাবে ক্ষমতা ভাগাভাগি করা হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
বুধবারই শরদ পাওয়ার দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। আনুষ্ঠানিকভাবে জানানাে হয়, মহারাষ্ট্রে কৃষকদের দুর্দশা নিয়ে আলােচনার জন্যই পাওয়ার প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, মােদির সঙ্গে বৈঠক করার পিছনে পাওয়ার আর একটি উদ্দেশ্য ছিল। তিনি কংগ্রেসকে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন, তারা যদি মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে টালবাহান করে, তাহলে সুযােগ ফসকে যেতে পারে। একটি সূত্রে জানা যায়, বিজেপি চেষ্টা করছে যাতে এনসিপি সমর্থন পাওয়া যায়। শিবসেনার থেকে মাত্র দু’টি আসন কম পেয়েছে এনসিপি। তাদের সমর্থন পেলে বিজেপি স্বচ্ছন্দে মহারাষ্ট্র সরকার গড়তে পারবে।