বুধবার বিহার বিধানসভার ভবিষ্যত্বাণী করে চাঞ্চল্যকর দাবি করল বিজেপির প্রাক্তন শরিক শিবসেনা। বুধবার শিবসেনার দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’য় দাবি করা হয় নামেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আসল ক্ষমতা বিজেপির হাতেই। সময় এলেই ওকে ছুড়ে ফেলে দেবে। নীতীশই বা কত দিন বিজেপির ‘অনুগ্রহ’- এর বােঝা বইতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা।
এ দিন দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’য় নীতীশের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালােচনা করেছে শিবসেনা। ‘সামনা’য় প্রকাশিত একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদী বিহারকে একটু বেশিই ভালবাসেন। আসনসংখ্যা বেশি ছিল বলে মহারাষ্ট্রে শিবসেনাকে মুখ্যমন্ত্রীর আসন ছেড়ে দিতে আপত্তি ছিল বিজেপি- র।
কিন্তু বিহার নির্বাচনে যে দল তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছে, তাদের হাতেই মুখ্যমন্ত্রিত্বের শিরােপা তুলে দিয়েছে তারা। কী মহানুভবতা! রাজনীতিতে এমন পরিত্যাগ সত্যিই বিরল। কিন্তু প্রশ্ন হল, নীতীশ কুমার কতদিন এই অনুহের বােঝা বইতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, বিহারে বিজেপি-নীতীশের সমঝােতা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছে শিবসেনা। কম আসন পেয়েও বিজেপির অনুগ্রহ নেওয়া উচিত হবে না বলে বিরােধীদের সুরে তারাও সুর মিলিয়েছিল। তবে সে সবের তােয়াক্কা না করেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মেনে বেশি আসন পাওয়া সত্ত্বেও বিহারে নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়েছে বিজেপি। তবে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে দলের দুই বিধায়ককে তুলে এনেছে তারা। নীতীশকে চাপে রাখতেই দুই বিধায়ক উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চাপিয়ে দিয়েছে বলেও দাবি করেছে শিবসেনার।
তাদের মতে, ‘নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রীর করার প্রতিশ্রুতি পালন করেছে বিজেপি। কিন্তু এটা স্থায়ী সিদ্ধান্ত কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। নামেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ তাঁকে নাকাল করে পদত্যাগ দিতে বাধ্য কর এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। পরিকল্পনা করেই তাই দু দু’জন উপমুখ্যমন্ত্রী চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।” এ দিন সামনায় এমনই দাবি করা হয়।
এ দিকে, নীতীশ ও আগাম সতর্ক হতে শুরু করে দিয়েছেন বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাঁদের মতে, ক্ষমতায় এলে ১৯ লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেয় বিজেপি। এ ব্যাপারে গােড়া থেকেই নিশ্চুপ নীতীশ। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেও কর্মসংস্থানের দায়িত্ব সন্তর্পণে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।
যে কারণে বাণিজ্য, শিল্পের মতাে বিভাগ দুই উপমুখ্যমন্ত্রীর হাতে ছেড়ে দিয়েছেন নীতীশ, যাতে পরবর্তীকালে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি ‘মিথ্যা’ প্রতিপন্ন হলেও, তাঁকে দোষারােপ করতে না পারে বিজেপি। সেই উদ্দেশ্যেই তার এই কৌশলী পদক্ষেপ বলে দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।