• facebook
  • twitter
Thursday, 21 November, 2024

বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভে ৭টি বন্য হাতির মৃত্যু

গুরুতর অসুস্থ আরও ২, খাদ্যে বিষক্রিয়া বলে সন্দেহ

ছবি: আইএএনএস

মধ্যপ্রদেশের উমারিয়া জেলার বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভের কোর এলাকায় মঙ্গলবার চারটি বন্য হাতির (তিনটি স্ত্রী এবং একটি পুরুষ) মৃতদেহ পাওয়া যায়। মৃত হাতিগুলি ১৩-সদস্যের একটি দলের অংশ ছিল। সেই একই দলে থাকা আরও পাঁচটি হাতির অবস্থাও অত্যন্ত সঙ্কটজনক, তাঁরা উঠে দাঁড়াতেও পারছে না বলে জানা যায়। তবে বুধবার সকালে আশঙ্কাজ‍নক অবস্থায় থাকা আরও তিনটি হাতি প্রাণ হারায়।

মধ্যপ্রদেশ বন দপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক (বন্যপ্রাণ) একটি সরকারি বিবৃতিতে নিশ্চিত করেন যে, অসুস্থ হাতিগুলির চিকিৎসার জন্য একটি বিশেষ পশুচিকিৎসা দলের পাশাপাশি জব্বলপুর স্কুল অফ ওয়াইল্ডলাইফ ফরেনসিক অ্যান্ড হেলথ-এর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। বন দপ্তরের স্টেট টাইগার স্ট্রাইক ফোর্স (এসটিএসএফ)-এর একটি টিমও বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভে রওনা ঘটনাটির তদন্তে রওনা দেয়।
বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভ ম্যানেজমেন্টের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, হাতিগুলি প্রচুর পরিমাণে দাঁড়িয়ে থাকা কদো-কুটকি ফসল (চালের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত এক ধরনের শস্য) খেয়েছিল, যা খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের মাধ্যমে ঘটনাস্থলে বিশদ তদন্তই প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করবে। তবে ভোপাল-ভিত্তিক বন্যপ্রাণী ও আরটিআই কর্মী অজয় দুবে ঘটনাটির বিষয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি সন্দেহ করছেন যে, প্রচুর পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করা ফসল, বিশেষত ধান, যা হাতিরা খেয়ে থাকতে পারে, খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি প্রথম ঘটনা যেখানে এতগুলো হাতি একটি ছোট জঙ্গলে একসাথে প্রাণ হারিয়েছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট বা রেল দুর্ঘটনা এবং বিষক্রিয়ার বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু একসাথে এতগুলো হাতির মৃত্যু ঘটায় বড় ষড়যন্ত্রের মতো মনে হচ্ছে,’।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভের টহল দলগুলি প্রথমে খিতাউলি রেঞ্জের সলখানিয়া-চারকভার জঙ্গলে তিনটি হাতিকে পড়ে থাকতে দেখে। এরপর আরও একটি হাতির মৃতদেহ পাওয়া যায় এবং পাঁচটি হাতিকে সংকটজনক অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। চিকিৎসক দলকে দ্রুত তাদের সাহায্যে পাঠানো হয় এবং চারটি হাতির মৃত্যুর পাশাপাশি পাঁচটি হাতির অবস্থা সঙ্কটজনক বলে নিশ্চিত করা হয়।
ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (ডব্লিউআইআই-দেহরাদুন)-এর বিশেষজ্ঞরাও এই বিষয়ে মধ্যপ্রদেশ বন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল থেকে বাঁধবগড় টাইগার রিজার্ভে বন্য হাতির একটি বড় দল বসবাস করছে। পূর্ব মধ্যপ্রদেশের এই অঞ্চল, বিশেষ করে শাহদোল এবং অনুপপুর জেলাগুলিতে হাতি এবং মানুষের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা বেড়েছে।