করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষৈত্রে তারা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ল্যানসেট বিজ্ঞান পত্রিকায় এই খবর প্রকাশের পরেই ভারতীয় সংস্থা সেরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, আগস্টেই ভারতে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়ে যেতে পারে মানুষের শরীরে। এই ভ্যাকসিনের দাম হয়তো হবে এক হাজার টাকা। আর এই সিদ্ধান্ত নিতে মাত্র, ৩০ মিনিট সময় তারা নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন পুনাওয়ালা।
তাঁর কথায়, এখনও সম্পূর্ণ টেস্ট হয়নি এমন একটা ভ্যাকসিনের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা লাগিয়েছি আমরা। যদি পরের পর্যায়ের ট্রায়ালগুলি সফল না হয়, তাহলে পুরো স্টক নষ্ট করে ফেলতে হবে। অর্থাৎ ১৫০০ কোটি টাকা জলে যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পুনাওয়ালা জানান, আমাদের মনে হয়েছিল এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই আমরা মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই ভ্যাকসিনের চুড়ান্ত ট্রায়লের আগেই আমরা তার জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের মানুষের জন্যই এই ঝুঁকিটা নেওয়া হয়েছে। কোভিড ভ্যাকসিন গবেষণায় অক্সফোর্ডের হাত ধরেছে ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্ম অ্যাস্ট্রজেনকা।
অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনকার সঙ্গে চুক্তি করে অক্সফোর্ডের ফর্মুলায় ডিএনএ ভ্যাক্সিন তৈরি করছে পুনের ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানি সেরাম ইনস্টিক্ট অব ইন্ডিয়া। তার জন্যই ১৫০০ কোটি টাকার চুক্তি করেছে তারা। ল্যানসেটের রিপোর্ট সামনে আসার আগেই সেরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছিলেন অক্সফোর্ডের ভ্যাক্সিনের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে।
ব্রিটেনে অক্সফোর্ডের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের প্রতিটি পদক্ষেপের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। সবুজ সঙ্কেত মিললেই ভারতে এই ভ্যাক্সিনের ট্রায়াল শুরু হবে মানুষের শরীরে। তারা এও জানিয়েছে, ভারতে প্রতিটি মানুষকে টিকা দিতে অন্তত ২ বছর সময় লাগবে।
সোমবার প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের রিপোর্ট সামনে আনে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনকা। সেই রিপোর্ট জানানো হয়, দুই পর্যায়ে ১০৭৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। দুটি দলে ভাগ করে একটি দলকে ভ্যাক্সিনের একটি ডোজ এবং অন্য দলটিকে নির্দিষ্ট দিনের ব্যবধানে দুটি ডোজ দেওয়া হয়।
দেখা গেছে যাদের একটি ডোজ দেওয়া হয়েছিল, তাদের ৯০ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। ইতিবাচক দিক হল এই ভ্যাক্সিন শুধু অ্যান্টিবডিই তৈরি করছে না, দেহকোষের টি কোষকেও সক্রিয় করে তুলছে। এই টি কোষ হল শরীরে রোগ প্রতিরোধের মূল বর্ম।