বাবা সিদ্দিকী হত্যায় চাঞ্চল্যকর তথ্য, টাকা নিয়ে বিবাদের জেরে ভিন রাজ্যের ভাড়াটে খুনি নিয়োগ 

এনসিপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে আরও ৫ সন্দেহভাজন। ফলে এই মামলায় মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল ৯ জন। মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ এই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার। ধৃতরা হলেন নিতিন গৌতম সাপ্রে বয়স ৩২, সম্ভাজি কিষান পারধি বয়স ৪৪, প্রদীপ দত্তু থমব্রে ৩৭ বছর, চেতন দিলীপ পারধি ২৭ বছর এবং রাম ফুলচাঁদ কানৌজিয়া, ৪৩ বছর বয়স। নিতিন গৌতম সাপ্রে ডোম্বিভলির বাসিন্দা। অন্যদিকে পারধি, থমব্রে এবং পারধি থানে জেলার অম্বরনাথের বাসিন্দা এবং কানৌজিয়া রায়গড়ের পানভেলের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
 
শুক্রবার রায়গড় থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচ জনকে। গ্রেপ্তার হওয়া ৯ জনের মধ্যে যাঁরা গুলি চালিয়েছিলেন, তাঁরাও আছেন। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজন সন্দেহভাজন নিতিন সাপ্রের নেতৃত্বে সিদ্দিকীকে হত্যার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল।  কিন্তু পরে লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় তারা পিছিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ধৃত আরও জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে এই খুনের বিষয়ে প্রথম পরিকল্পনা করেছিলেন শুভম। সিদ্দিকীকে গুলি করে হত্যা করার বরাত দেওয়া হয়েছিল তাঁকেই। কিন্তু তাঁর দাবি মতো টাকা দিতে শুভম দিতে রাজি হননি। তবে গোটা পরিকল্পনার সঙ্গে প্রথম থেকেই ছিলেন তিনি ।  
 
মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা নিতিন গৌতম সাপ্রে পুলিশকে আরও জানিয়েছে, তিনি সচেতন ছিলেন যে বাবা সিদ্দিকী একজন উচ্চ মাপের রাজনীতিবিদ এবং একই সঙ্গে বিনোদন জগতেও ছিল তাঁর অবাধ গতিবিধি। তাই ওই রাজ্যে সিদ্দিকীর হত্যাকাণ্ডের পর একটি বিশাল সমস্যা তৈরি হবে। সাপ্রে আরও জানান, তিনি নিজে এই কাজের জন্য ১ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। তাতে রাজি হননি শুভম। এর পরেই তিনি অন্য রাজ্যে ভাড়াটে খুনির সন্ধান করেন। কারণ তিনি জানতেন, অন্য রাজ্যের কেউ মহারাষ্ট্রে সিদ্দিকীর গুরুত্ব কতটা তা মালুম করতে পারবেন না। ফলে পারিশ্রমিকও কম চাইবেন। এবং তাঁর ভাবনা যে ঠিক তাও প্রমাণিত হয়েছিলও। সিদ্দিকীকে হত্যা করতে হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে যে ভাড়াটে খুনিদের ডাকা হয়েছিল তাঁরা অনেক কম পারিশ্রমিকে এই কাজ করতে রাজি হয়ে যান।
 
পুলিশি জেরার মুখে অভিযুক্ত জানান, আর্থিক কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সিদ্দিকী খুনের মূলচক্রী শুভম লোনকর। তাঁকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তদন্তকারীরা তদন্তে খুঁজে পেয়েছেন যে নিতিন গৌতম সাপ্রের নেতৃত্বে মূল ষড়যন্ত্রকারী শুভম লোনকার এবং মাস্টারমাইন্ড মহম্মদ জিশান আখতারের সঙ্গে শুটিং পর্যন্ত যোগাযোগ ছিল। পুলিশ এখন তদন্ত করছে যে শুভম এবং আখতার, লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের মাধ্যমে এনসিপি নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল কিনা।