ধর্মনিরপেক্ষতা মূল কাঠামোর অঙ্গ, মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের

শব্দের অভিধানগত অর্থ মেনে আমরা চলছি না, জানিয়ে স্থগিত মামলা
দিল্লি, ১১ জুলাই– সমাজতান্ত্রিক শব্দের সম্ভবত আমরা নিজস্ব সংজ্ঞা তৈরি করেছি৷ শব্দের অভিধানগত অর্থ মেনে আমরা চলছি না৷’ সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দু’টি বাদ দেওয়ার মামলায় এমনই মত জানিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দ বাদ দেওয়া মামলায় মামলা স্থগিত করে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্না৷ আর্জির শুনানি অগস্ট পর্যন্ত স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট৷

সংবিধানের মূল কাঠামো থেকে ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি বাদ দেওয়ার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী৷ সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার বিচারপতি সঞ্জীব খন্না বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি যে সংবিধানের মূল কাঠামোর অন্তর্গত তা একাধিক রায়ে আগেই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ সমাজতান্ত্রিক শব্দের সম্ভবত আমরা নিজস্ব সংজ্ঞা তৈরি করেছি৷ শব্দের অভিধানগত অর্থ মেনে আমরা চলছি না৷’

এই বিষয়ে আর্জি পেশ করেছেন আরও কয়েক জন আবেদনকারী৷ তাঁদের আর্জির সঙ্গেই অগস্টে স্বামীর আবেদনের শুনানি হবে৷ স্বামীর আর্জির বিরোধিতা করে একটি আবেদন পেশ করেছেন সিপিএম সাংসদ বিনয় বিশ্বমও৷ আর্জিতে তাঁর বক্তব্য, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতান্ত্রিক আদর্শ ভারতীয় সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্যের অঙ্গ৷ ফলে প্রস্তাবনায় ওই দু’টি শব্দযোগ হওয়ায় সংবিধানের প্রকৃতি বদলায়নি৷


১৯৭৬ সালে ৪২তম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দু’টি যোগ করে ইন্দিরা গান্ধি সরকার৷ কিন্ত্ত সংবিধান গ্রহণের তারিখ (১৯৪৯ সালের ২৯ নভেম্বর) একই রাখা হয়েছিল৷ এই প্রক্রিয়া সঠিক কি না তা কেবল আইনচর্চার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভেবে দেখতে এই মামলার সঙ্গে যুক্ত আইনজীবীদের বলেছে সুপ্রিম কোর্ট৷

আবেদনে স্বামী জানিয়েছেন, এভাবে সংবিধানের প্রস্তাবনা বদল সংসদের এক্তিয়ারের বাইরে৷ সংবিধানপ্রণেতারা কখনওই গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দগুলি যোগ করতে চাননি৷ বি আর অম্বেডকরও এই শব্দ দু’টি যোগ করার বিরোধী ছিলেন৷ কারণ, তিনি মনে করতেন সংবিধান নাগরিকদের উপরে কয়েকটি রাজনৈতিক মতাদর্শ চাপিয়ে দিতে পারে না৷