করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর পড়ুয়ারা স্কুলের মুখ দেখেনি, হয়নি মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। আগামী বছর ফের স্বাভাবিক নিয়মে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে। সোমবার ২০২২ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি ঘোষিত হল। বুধবার বিকেলে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করা হয়।
এদিন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিনক্ষণ ঘোষণা করেন পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা করেন সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য।
জানানো হয়, আগামী ৭ মার্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। শেষ হবে ১৬ মার্চ। ২ এপ্রিল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে, চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, ২০২২-এর মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে বেলা ১১ টা ৪৫ মিনিট থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত। ডিসেম্বরে হতে পারে টেস্ট।
৭ মার্চ প্রথম ভাষা ( বাংলা )
৮ মার্চ দ্বিতীয় ভাষা ( ইংরেজি )
৯ মার্চ ভূগোল
১১ মার্চ ইতিহাস
১২ মার্চ জীবনবিজ্ঞান
১৪ মার্চ অঙ্ক
১৫ মার্চ ভৌতবিজ্ঞান
১৬ মার্চ ঐচ্ছিক বিষয়ের পরীক্ষা হবে।
উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা হোম সেন্টারগুলিতে হবে বলে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে সোমবার জানানো হয়েছে। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষা হোম সেন্টারে হবে না। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, হোম সেন্টারে এ বছরের পরীক্ষা হবে।
অর্থাৎ অন্য স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে না ছাত্রছাত্রীদের। নিজেদের স্কুলে গিয়েই পরীক্ষা দিতে হবে। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষা সেই নিয়মে হবে না। মাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়েই পরীক্ষা দিতে হবে।
তবে পর্ষদ জানিয়েছে মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রশ্ন উঠছে, কেন দুই পরীক্ষার ক্ষেত্রে দুই রকম নিয়ম? উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা যদি হোম সেন্টারে নেওয়া যায়, তবে মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কী অসুবিধা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।
এই পরীক্ষা হোম সেন্টারে আয়োজন করতে গেলে সব স্কুলগুলিকেই পরীক্ষা কেন্দ্র বানিয়ে ফেলতে হয়। যার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা রয়েছে। সব স্কুলে বোর্ডের পরীক্ষা আয়োজন করার মতো পরিকাঠামো নেই। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় একই পরীক্ষাকেন্দ্রে অনেকগুলি স্কুল পরীক্ষার্থীরা আসেন।
উল্টোদিকে উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা নেই। কারণ মাধ্যমিকের তুলনায় উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী অনেক কম হয়। হোম সেন্টারে সেই পরীক্ষার আয়োজন করায় বেগ পেতে হবে না তেমন।
তবে সংসদ ও পর্যদের এই রকম সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি। তিনি বলেছেন, একই রাজ্যের অধীন পর্ষদ এবং সংসদ এইরকম পরিস্থিতিতে দু’রকম পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারে না।
হোম সেন্টারে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ পরীক্ষা নিতে পারলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কেন পারবে না? হোম সেন্টার করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকেও পরীক্ষা নিতে হবে এই আবেদন থাকছে। দু’রকম পদ্ধতি গ্রহণ করা হলে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হবে, যা কখনওই অভিপ্রেত নয়।