অবশেষে উদ্ধার হল আরব সাগরে ভেঙে পড়া মিগ ২৯ কে বিমানের দ্বিতীয় পাইলট নিশান্ত সিংয়ের মৃতদেহ। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার প্রায় ১২ দিন পর তাঁর মৃতদেহটি উদ্ধার করল ভারতীয় নৌসেনা। গােয়া উপকূল থেকে ৩০ মাইল দূরে সমুদ্রের গভীরে ৭০ মিটার নীচ থেকে উদ্ধার করা হল তার দেহ।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর বিকাল ৫ টা নাগাদ আরব সাগরে যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্য থেকে পাড়ি দিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার মিগ ২৯ কে বিমান। তারপরে মহড়া চলাকালীন আরব সাগরে ভেঙে পড়ে বিমানটি। বিমানের দুই পাইলটের মধ্যে এক জনকে তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু অন্য পাইলট নিশান্ত সিংহের কোনও হদিশ মেলেনি। তাঁর খোঁজে নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার নামানাে হয়। কোস্টাল পুলিশও নিশান্তের অনুসন্ধানে নামে। নিশান্তকে খুঁজতে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সঙ্গেও যােগাযােগ করা হয়।
তল্লাশি অভিযান চালানাের সময় গত ২৯ নভেম্বর বিমানের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ মেলে। কিন্তু নিশান্তের কোনও চিহ্ন মেলেনি। নৌবাহিনী সূত্রে জানানাে হয়েছে, তার পরেও তল্লাশি অভিযান জারি রাখা হয়েছিল।
এর পরে সােমবার আধিকারিকদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় নৌসেনা দুর্ঘটনাগ্রস্ত মিগ ২৯ কে বিমানের দ্বিতীয় পাইলট নিশান্ত সিংয়ের মৃতদেহ সমুদ্রের গভীরে ৭০ মিটার নীচ থেকে উদ্ধার করেছে। গত ২৬ নভেম্বর ঘটেছিল দুর্ঘটনাটি। তারপর এতদিন ধরে তল্লাশির পর গােয়া উপকূল থেকে ৩০ মাইল দূরে মৃতদেহটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এই খবর সামনে আসতেই সােশ্যাল মিডিয়ায় শহিদ ওই আধিকারিককে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে গােটা দেশ।
প্রসঙ্গক্রমে, মিগ সিরিজের বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এই বিমান চালাতে গিয়ে মৃত্যুও হয়েছে বায়ুসেনার বহু পাইলটের। ২০১৯-এর জুন মাসেও এমনই একটি মিগ ২৯ কে বিমান ভেঙে পড়েছিল। মিগ সিরিজের বিমানগুলি ভারতীয় বায়ুসেনার অনেক সাফল্যের সঙ্গীও। কারগিল যুদ্ধে সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি ছিল মিগ যুদ্ধ বিমান। আবার সম্প্রতি বায়ু সেনা অভিনন্দন বর্তমান মিগ ২১ বিমানে চড়েই পাকিস্তানে ঢুকে হামলা চালিয়েছিলেন।
সত্তরের দশকের প্রথম দিকে ‘মিকোয়ান গুরেভিচ ডিজাইন ব্যুরো এই মিগ বিমানের নকশা তৈরি করেছিল। এটি একটি চতুর্থ প্রজন্মের সুপারসােনিক জেট ফাইটার। এর প্রস্তুতকারক সােভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৮৩ সালে তৎকালীন সােভিয়েত ইউনিয়নের বিমান বাহিনীতে এই বিমান প্রথম নিযুক্ত করা হয়।