তামিলনাড়ুর সব আসনেই হয় ভোটগ্রহণ। তামিলনাড়ুতে ৩৯ টি আসনে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত গড়ে ভোট পড়েছে ৬৩.২০ শতাংশ। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে বিহারে , ৪৬.০৩ শতাংশ। মণিপুরে ভোটের হার ৬৭. ০৭ শতাংশ। দক্ষিণ চেন্নাই আসনে ভোটের হার ৫৭.০২ শতাংশ। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বেলা ৩ টে পর্যন্ত গোটা দেশে ভোটের হার প্রায় ৪৯.৭৮ শতাংশ। উত্তরপ্রদেশে ৪টি লোকসভা কেন্দ্রে বেলা ৩ টে পর্যন্ত ৫৭.৬ শতাংশ ভোট পড়ে। সিকিমে ভোটের হার ৫২.৭৩ শতাংশ। অসমের ৫টি কেন্দ্রে ৭০.০৮ শতাংশ। উত্তরাখণ্ডে ভোট পড়েছে ৫৩।০৬ শতাংশ, রাজস্থানে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৫০.০৫ শতাংশ। মিজোরামে ৫২.০৭, পুদুচেরিতে ৫৮.৮৬ শতাংশ ভোট পড়ে। শুক্রবার সন্ধে ৭ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ পর্ব চলে।
এদিন ভোট হয় উত্তরাখণ্ড এবং মহারাষ্ট্রের ছয় আসন, উত্তরপ্রদেশের আট আসন, রাজস্থানের ১২ আসনে ভোটগ্রহণ হয়। পশ্চিমবঙ্গের তিন আসন ছাড়াও ভোটগ্রহণ হচ্ছে দেশের অন্যান্য ৯৯ আসনে। এ ছাড়াও অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর এবং মেঘালয়ের দু’টি করে আসনে ভোটগ্রহণ হয়। একটি করে আসনে ভোটগ্রহণ হয় ছত্তীসগঢ়, মিজ়োরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, ত্রিপুরা, উত্তরাখণ্ড, আন্দামান ও নিকোবর, জম্মু ও কাশ্মীর, লক্ষদ্বীপ এবং পুদুচেরিতে। বিহারের চার আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয় । উল্লেখ্য, মণিপুরে মোট দু’টি লোকসভা আসন। ইনার মণিপুর এবং আউটার মণিপুর। তবে নির্বাচন কমিশন আউটার মণিপুরকে ভাগ করে দু’দফায় ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নেয় । শুক্রবার তাই আউটার মণিপুরের একাংশে ভোটগ্রহণ হয় । বাকি অংশে ভোটগ্রহণ হবে ২৬ এপ্রিল। পশ্চিমবঙ্গের তিন আসন জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র।
উত্তরপ্রদেশে বুথদখলের অভিযোগ ওঠে। সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করে অখিলেশ যাদবের দল দাবি করতে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের রামপুর এবং মুজফ্ফনগরের এলাকা বুথে ইভিএমে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মুজফ্ফনগরের বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়ানের বিরুদ্ধে বুথদখলের অভিযোগ তোলেন এসপি প্রার্থী হরেন্দ্র মালিক। কমিশনে অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি জায়গায় অশান্তির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্যের শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটে হিংসার ঘটনার অভিযোগ তুলেছে সমাজবাদী পার্টি ।
শুক্রবার চেন্নাইয়ের এক বুথে ভোট দেন ডিএমকে প্রধান তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। ডিএমকে প্রধানের সঙ্গে ভোট দিতে আসেন তাঁর স্ত্রীও। ভোট দিয়ে এসে স্ট্যালিন বলেন, ‘‘সকলের উচিত ভোট দেওয়া।’’ পাশাপাশি নিজের লোকসভা কেন্দ্রে ভোট দিলেন সদ্গুরু। তামিলনাড়ুর চেন্নাইতে ভোট দেন অভিনেতা রজনীকান্ত। শুক্রবার সকাল সকালই নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বুথে পৌঁছে যান তিনি।
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড ভোট দেন টুরাতে। বিজেপির সহযোগী দল এনপিপির প্রধান তথা মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা তুরা লোকসভা কেন্দ্রের এক বুথে সকাল সাড়ে ৬টায় পৌঁছে যান। ভোট দিতে ভোর ভোর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা। ভোট দিতে যাওয়ায় উৎসাহ দিতে নিজের গাড়িচালক, দেহরক্ষীদের ছুটি দিয়েছিলেন। নিজেই গাড়ি চালিয়ে টুরার ওয়ালবাকগ্রে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছে যান সাংমা। প্রায় তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন তিনি। টুরা আসনে তৃণমূলের প্রার্থী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার ভাই জ়েনিথ। এ ছাড়াও কংগ্রেস এই আসনে প্রার্থী করেছে সালেং এ সাংমাকে। ২০১৯ সালে তুরা আসন থেকে জয় পেয়েছিলেন আগাথা সাংমা। তাঁকে এ বারও প্রার্থী করেছে এনপিপি।
ভোট দেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। শুক্রবার তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা জেলার একটি বুথে গিয়ে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম। শিবগঙ্গা লোকসভা আসন থেকেই এ বার কংগ্রেস প্রার্থী করেছে চিদম্বরম-পুত্র কার্তিকে। বিজেপির হয়ে লড়ছেন দেবনাথন যাদব এবং এআইএডিএমকে-র প্রার্থী জেভিয়েরদাস। ২০১৯ সালে এই আসন থেকেই জিতে সাংসদ হয়েছিলেন চিদম্বরম-পুত্র।
ভোট দেন সঙ্ঘপ্রধান ভাগবত। রাষ্ট্রীয় সেবক সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত শুক্রবার সকাল সকালই ভোট দিতে বুথে পৌঁছে যান। মহারাষ্ট্রের নাগপুরের এক বুথে এসে ভোট দেন তিনি।
এদিকে নাগাল্যান্ডে ৬ টি জেলার মানুষ ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। কমিশন সূত্রে বলা হয়, এমন ঘটনা নজিরবিহীন। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের ভোট বয়কটের নজির মাওবাদী অঞ্চলেও নেই। যদিও ওই ৬ জেলায় হিংসার কোন ঘটনা ঘটেনি। ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইস্টিং নাম একটি সংগঠন স্বশাসনের দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক দেয়।
অরুণাচল প্রদেশের মালগাম কেন্দ্রে ভোট দেন একমাত্র ভোটার শোকেলা তায়াং। আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে শোম্পেন আদিবাসী পরিবারের ৭ জন ভোটার ভোট দেন। এছাড়াও ভোট দেন আদিবাসী জনজাতির ভোটাররা। এদিন রাজস্থানে সিকারে ধীরাজ ও পূজা সনি বিয়ে করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যান। দুজনে মিলে সেলফিও তোলেন।