• facebook
  • twitter
Thursday, 19 December, 2024

আম্বেদকর ইস্যুতে ধুন্ধুমার কাণ্ড সংসদ চত্বরে, রাহুলের বিরুদ্ধে বিজেপি সাংসদকে ধাক্কা মারার অভিযোগ

আম্বেদকর ইস্যুতে ধুন্ধুমার কাণ্ড সংসদ চত্বরে। বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গিকে ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠল। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন বিজেপির আরও এক সাংসদ মুকেশ রাজপুত। দুইজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পাল্টা রাহুল গান্ধী বিজেপি সাংসদদের বিরুদ্ধে তাঁকে ধাক্কা মারার এবং অধিবেশন কক্ষে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। এদিকে ঘটনার পর রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে বিজেপি।

আম্বেদকর ইস্যুতে ধুন্ধুমার কাণ্ড সংসদ চত্বরে। বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গিকে ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠল। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন বিজেপির আরও এক সাংসদ মুকেশ রাজপুত। দুইজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পাল্টা রাহুল গান্ধী বিজেপি সাংসদদের বিরুদ্ধে তাঁকে ধাক্কা মারার এবং অধিবেশন কক্ষে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। এদিকে ঘটনার পর রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে বিজেপি। অনুরাগ ঠাকুর-সহ ৩ জন  বিজেপি সাংসদ, সংসদ মার্গ থানায় রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিজেপির দুই আহত সাংসদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তাঁদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সংসদে বিআর আম্বেদকরকে নিয়ে করা মন্তব্যের প্রতিবাদে সংসদ চত্বরের ভিতরে প্রতিবাদ মিছিল করে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’-র সাংসদরা। অভিযোগ, সেই সময় এনডিএ সাংসদরাও একটি প্রতিবাদ মিছিল করছিলেন। এই দুই মিছিলকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের সাংসদদের মধ্যে সংঘাত হয়। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেছেন, তাঁদের প্রবীণ সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গিকে ধাক্কা মেরেছেন রাহুল গান্ধী।  
 
ওড়িশার বালেশ্বরের সাংসদ সারাঙ্গির অভিযোগ, তাঁকে ধাক্কা মেরেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী স্বয়ং। জানা গিয়েছে, মাথায় আঘাত পেয়েছেন সারাঙ্গি। ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে। সংসদ চত্বরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন কংগ্রেস এবং বিজেপি সাংসদরা। তাতে ওড়িশার বালাসোরের সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গির মাথা ফেটে যায় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম হন উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদের সাংসদ মুকেশ রাজপুতও। বিজেপির অভিযোগ, ওই দুই সাংসদই জখম হয়েছেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ধাক্কায়। রাহুল গান্ধী ফারুখাবাদের সাংসদ মুকেশ রাজপুতকে ধাক্কা মারেন। তিনি প্রতাপের উপর পড়ে যান । সারাঙ্গির  মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। মুকেশও জখম হন। সতীর্থ বিজেপি সাংসদ এবং লোকসভার কর্মীরা ধরাধরি করে অধিবেশন কক্ষের বাইরে আনার পরে সারাঙ্গিকে দেখতে আসেন রাহুল গান্ধী। এরপর আহত সাংসদ ২ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই নিয়ে লোকসভায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ‘রাহুল গান্ধীর ধাক্কায় দুই বিজেপি সাংসদ গুরুতর জখম হয়েছেন। কোনও সাংসদ কীভাবে সংসদ চত্বরে বল প্রয়োগ করতে পারেন ? কোন আইন এর অনুমতি দিচ্ছে ? আপনি কি কুংফু-ক্যারাটে অন্য সাংসদদের মারধর করার জন্যই শিখেছেন ? ‘ 

বিজেপি সূত্রের খবর, আহত দুই সাংসদই হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনার খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহ্বান এবং প্রহ্লাদ জোশী তাঁদের দুই আহত সংসদকে দেখতে দিল্লির আরএমএল হাসপাতালে যান। জানা গিয়েছে , সারাঙ্গির মাথায় সেলাই পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ফোনে প্রতাপ সারাঙ্গি এবং মুকেশ রাজপুতের স্বাস্থ্যের খবর নেন।

এদিকে কংগ্রেসের অভিযোগ বিপরীত। রাহুল গান্ধী সংবাদ মাধ্যমের সামনে অভিযোগ করেন, ‘ আমি যখন সংসদ ভবনে ঢুকতে যাই তখন বিজেপির সাংসদরা আমাকে ঘিরে ধরেন এবং ধাক্কা মারেন। ধাক্কাধাক্কি বলতে এটুকুই হয়েছে। সংসদ ভবনে আমাদের ঢোকার অধিকার রয়েছে।’  কংগ্রেস সাংসদ মানিকম ঠাকুরের অভিযোগ, কংগ্রেস সাংসদরা সংসদে ঢুকতে গেলে বিজেপি সাংসদরা বাধা দেন। লাঠিসোঁটা হাতে করে সংসদে এসেছিলেন বিজেপি সাংসদরা। রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গেকে লক্ষ্য করে স্লোগান দেওয়া হয়, কটূক্তি করা হয়।
 
এই ঘটনায় কংগ্রেসের তরফে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিজেপি সাংসদরা ল;অতি লাগানো প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিরোধী সাংসদদের ভবনের ভেতরে যেতে বাধা দিচ্ছেন। 
 
কয়েকদিন আগে অমিত শাহ সংবিধানের ৭৫ বছর পূর্তি নিয়ে রাজ্যসভায় এক বক্তৃতায় বলেন, ‘এখন একটা ফ্যাশন হয়েছে, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর…।” তিনি যোগ করেন, “এত বার ভগবানের নাম নিলে সাত জন্মে স্বর্গ পাওয়া যেত।” বুধবার থেকেই শাহের বিরুদ্ধে আম্বেদকর অবমাননার অভিযোগ তুলে সরব হন কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। তাঁরা দাবি করেন, বাবাসাহেব আম্বেদকরকে অপমান করায় ক্ষমা চাইতে হবে অমিত শাহকে। সেই দাবিতেই বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ মিছিল করছিলেন রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা। লোকসভায় সেই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গন্ডগোলের সৃষ্টি হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে ওড়িশায় অস্ট্রেলীয় মিশনারি গ্রাহাম স্টেইনস এবং তাঁর দুই শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় বজরং দলের সঙ্গে সারাঙ্গির নামও জড়িয়ে পড়ে। সেই সময় বজরং দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন তিনি। বিচারে সারাঙ্গি রেহাই পেলেও মূল অভিযুক্ত দারা সিংহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।

সংসদে বৃহস্পতিবারে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। লোকসভার অধিবেশনেও এই নিয়ে আবার আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারপক্ষের তীব্র তোপের মুখে পড়তে পারেন ধাক্কা মারায় অভিযুক্ত বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। অন্যদিকে, বিরোধীরা অমিত শাহের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে অনড়।