‘মোদি গ্যারান্টি’ নিয়ে প্রশ্ন সাংবাদিক সম্মেলন করে ‘সাত দফার’ ভোট নিয়ে সরব চন্দ্রিমা ও ঋতব্রত

নিজস্ব প্রতিনিধি— শনিবার দুপুরেই নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট৷ সপ্তম দফায় ভোট হবে বাংলায়, ১৯ এপ্রিল থেকে ১লা জুন পর্যন্ত৷ ভোটের এই নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ল তৃণমূল৷ তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে সাত দফার ভোট নিয়ে সরব হন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সভাপতি ঋতব্রত ব্যানার্জি৷

গতবারের মতো এ বারও বাংলায় সাত দফায় ভোট ঘোষণা করা হল৷ তৃণমূলের দাবি, দেশের অনেক বড় বড় রাজ্যে ভোট হবে এক কিংবা দু’দফায়৷ তৃণমূলের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যএ প্রসঙ্গে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, “২০১৯ সালেও সাত দফায় ভোট হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে৷ ২০২১ সালের বিধানসভায় ভোট হয়েছিল আট দফায়৷ সেবার বলা হয়েছিল, কোভিডের জন্য দফা বাডি়য়ে দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্ত্ত এ বার কী হয়েছে? এ বার কেন সাত দফায় ভোট করানো হল?’’

তৃণমূলের বক্তব্য অনুযায়ী, এতো দফায় ভোটের আয়োজন যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর বিরোধী৷ এত দফায় ভোট হলে সুবিধা পায় অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষমতাবান রাজনৈতিক দলগুলি৷ কারণ তারা তাদের টাকা কাজে লাগিয়ে ভোটের ফল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে৷ তাছাড়াও বেশি দফায় ভোট হলে ভোটারদের সংখ্যা কমতে থাকে৷ বারংবার এই সমস্যা তুলে ধরার পরও নির্বাচন কমিশন এই সমস্যাতে আমল দেয়নি, অভিযোগ তৃণমূলের৷


চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মনে করিয়ে দিয়েছেন অতীতের কথা৷ চণ্ডীগডে়র ভোট লুঠ হওয়ার প্রসঙ্গকে টেনে এনেছেন৷ পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠক থেকে কেন্দ্রকে নিশানা করতে পিছপা হননি তিনি৷ একশো দিনের কাজের এবং আবাস যোজনার বকেয়া টাকার পরিমান প্রকাশ করেন চন্দ্রিমা৷ তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধা পান না বেশিরভাগ মানুষ, সেই নথি নেই কেন্দ্রের কাছেও৷ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট থেকে সিবিআই কারোরই স্বচ্ছতা বজায় নেই৷ এমনকি তিনি বলেন, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট হয়ে উঠেছেন ‘এক্সটর্শন ডিরেক্টরেট’৷

প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন ‘মোদী গ্যারান্টি’ কে নিশানা করে৷ চন্দ্রিমা বলেন, মোদী গ্যারান্টি বলে কিছুই নেই৷ বাংলার মানুষ যাবতীয় সুবিধা পেয়েছেন দিদির হাত ধরেই৷ জব কার্ড হোল্ডাররা সময় মতো টাকা পেয়েছেন৷ ২ কোটি মানুষের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিন্ত্ত তা এখনো হয়নি৷ সুতরাং তাঁর ভাষায় ‘মোদির গ্যারান্টি’ বলে পৃথক ভাবে উল্লেখ করার কিছু নেই৷

সপ্তম দফার নির্বাচন যে নিতান্তই দীর্ঘ সময়, তাতে রাজ্যের অর্থভাণ্ডারে টান পড়তে পারে৷ তাছাড়াও কমতে পারে ভোটদাতার সংখ্যা৷ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা৷ এক বা দু দফার ভোটে এ সকল পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়া সম্ভব৷ তাই প্রতিবাদের সুর চড়িয়েছে ঘাসফুল৷ এ প্রসঙ্গে চন্দ্রিমা বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করছি না কেবল প্রতিবাদ জানাচ্ছি’৷

ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, তামিলনাড়ু, গুজরাটের মতো বড় রাজ্যগুলিতে দু দফায় নির্বাচন সম্পন্ন হয় সেখানে বাংলায় সাত থেকে আট দফার প্রয়োজন৷ মোদী গ্যারান্টি আসলে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি৷ বাংলার মানুষ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছেন৷ তিনি আশাবাদী, বাংলার মানুষ নির্বাচনে ভোটদানের মাধ্যমে তার যোগ্য জবাব দেবেন৷