লখনউ, ১৯ ফেব্রুয়ারি– ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশে পৌঁছে গিয়েছে রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা৷ কিন্তু ভারত জোড়ার চেষ্টায় ব্যস্ত রাহুল নিজের ইন্ডিয়া জোটকে জুড়ে রাখতে পারছেন না৷ একের পর এক জোট সঙ্গীছাড়া হচ্ছে ইন্ডিয়া৷ ে বশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের অনেকেই জুড়ে চলেছেন বিজেপি জোট এনডিএ-তে৷ এবার অখিলেশ সিং যাদবের পালা৷ আসনরফার গেরোয় উত্তরপ্রদেশে ইন্ডিয়া জোট৷ আসনরফা নিয়ে হাত শিবিরকে চূড়ান্ত প্রস্তাব দিয়েছে অখিলেশ যাদবের দল৷ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে শোনা যাচ্ছে অখিলেশ শিবির জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে মাত্র ১৫টি কংগ্রেসের জন্য ছাড়া যেতে পারে৷ তার বেশি নয়৷ কংগ্রেস যদি এই প্রস্তাবে রাজি হয়, তাহলে উত্তরপ্রদেশে ইন্ডিয়া জোট থাকবে৷ কিন্ত্ত কংগ্রেস যদি আরও বেশি আসন চায় সেক্ষেত্রে ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে নেই অখিলেশের দল৷ এরপর আলাদাভাবেই লড়াই করতে হবে দুই দলকে৷ কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির নেতাদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হলেও অবস্থান বদলে গররাজি সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো৷
ইতিমধ্যেই কংগ্রেস হাইকমান্ডকে নিজেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে সমাজবাদী পার্টি ৷ দলীয় সূত্রে খবর, এখন সবকিছু কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে৷ তাঁদের সিদ্ধান্তের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশে ইন্ডিয়া জোট টিকবে কিনা?
উল্লেখ্য, ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে অমেঠিতে রাহুল এবং রায়বেরলিতে সোনিয়ার বিরুদ্ধে প্রার্থী দেননি অখিলেশ৷ সেবার কংগ্রেস একমাত্র রায়বেরলিতে জয়ী হয়৷ আগের বারের লোকসভা এবং দু বছর আগের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে সমাজবাদী পার্টি কংগ্রেসে রাজ্যের ৮০টি আসনের মধ্যে ১৫’টির বেশি ছাড়তে নারাজ৷ এবারও সেই তালিকায় অমেঠি ও রায়বেরলি আছে৷
এখন রাহুল পড়েছেন মহা গেরোয়৷ সবে তিনি পেঁৗছেছেন উত্তরপ্রদেশে৷ আর এরমধ্যেই অখিলেশের তরফে এই দুঃসংবাদ৷ যার ফলে সোমবার রাহুলের সঙ্গে তার যাত্রাও বিশ বাঁও জলে৷ রাহুলের এদিন অমেঠিতে যাওয়ার কথা রয়েছে ৷ যাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবকেও৷ কিন্ত্ত সপা তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আসনরফা নিয়ে কংগ্রেসের মতামত জানার পরেই যাত্রায় যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন অখিলেশ৷ যদিও অখিলেশের যাত্রায় তাঁর যোগদান নিয়ে আশাবাদী কংগ্রেস নেতৃত্ব৷
যাত্রার ৩৭ তম দিনে নিজের পুরনো সংসদ এলাকায় প্রচার চালাবেন কংগ্রেস নেতা৷ তবে রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রার শুরু হওয়ার পর থেকেই দেখা গিয়েছে, যাত্রা শুরুর পর এখনও পর্যন্ত কোনও রাজ্যেই ইন্ডিয়া জোটের নেতারা তাঁর সঙ্গে পা মেলাননি৷ বাংলায় সিপিএমের সমর্থকেরা যাত্রায় অংশ নেয় বটে, কিন্ত্ত মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীরা কংগ্রেস নেতার সঙ্গে পা মেলাননি৷ বিহারে রাহুলের যাত্রা চলাকালে নীতীশের জোট বদলের ধাক্কা সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন লালু প্রসাদ যাদব ও তাঁর পুত্র তেজস্বী৷ তারই মধ্যে ইডির তলব নিয়েও ব্যতিব্যস্ত ছিলেন আরজেডি নেতারা৷ কিন্ত্ত উত্তরপ্রদেশ নিয়ে আশাবাদী কংগ্রেস৷ ওই রাজ্যে সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো রাহুলের পাশে থাকবেন বলে কংগ্রেস দাবি করে আসছিল৷ কিন্তু সেই দাবিও এখন পূরণ হবে কিনা সন্দেহের৷ মঙ্গলবার সনিয়া গান্ধির লোকসভা আসন রায়বেরলিতে যাবেন রাহুল৷ কংগ্রেস চাইছিল, অখিলেশ সেখানেই রাহুলের সঙ্গে পদযাত্রায় যোগ দিন৷ কিন্ত্ত অখিলেশের অনড় অবস্থান কংগ্রেসকে তুমুল অস্বতিতে ফেলে দিয়েছে৷
সমাজবাদি পার্টির এই আসন বিতর্কের মাঝেই কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ সোমবার বলেন, ‘আমরা আশাবাদী অখিলেশজি আমাদের নেতার সঙ্গে পা মেলাবেন৷ আসন নিয়ে আলোচনা এখনও চলছে৷’
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই সমাজবাদির একতরফাভাবে উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকটি আসনে প্রার্থী ঘোষণার পরই জল্পনা শুরু হয়, এবার বোধহয় অখিলেশের সময় হল জোট ভাঙার৷ তার পরেই কংগ্রেসের সঙ্গে চাপানউতোর শুরু হয়৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে অখিলেশ বলেন, উত্তরপ্রদেশে আসনরফার পথ এখনও খোলা রয়েছে৷ তবে সূত্রের খবর, কোনওমতেই ১৫টির বেশি আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি নয় সপা৷ কংগ্রেস বেশি আসন চাইলে ইন্ডিয়া জোট থেকেই বেরিয়ে যাবে দল৷ গতবারের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতি ‘সৌজন্য’ দেখিয়ে রায়বেরেলি ও অমেঠিতে প্রার্থী দেয়নি সপা৷ এবার জোট ভেঙে গেলে সেই সৌজন্যও থাকবে না বলেই অনুমান৷