‘মানবিক কারণে’ সফুরার জামিনে আপত্তি নেই বলে আদালতে জানান দিল্লি পুলিশের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা। এরপর মঙ্গলবার সফুরার আবেদন মঞ্জুর করে দিল্লি হাইকোর্ট। আড়াই মাস পর অবশেষে জামিনে মুক্ত হলেন সফুরা জারগার। জামিন পেলেও আপাতত রাজধানীর বাইরে পা রাখতে পারবেন না সফুরা। দশ হাজার টাকার বন্ড জমা রাখতে হবে বলে সফুরাকে নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লি হাইকোর্টের কিারপতি রাজীব শধর।
সিএএ আন্দোলনের কর্মী তথা জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার রিসার্চ স্কলার সফুরাকে গত ১০ এপ্রিল গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সিএএ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এবং হিংসার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। গ্রেফতারের পর সফুরার বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনেও পুলিশ মামলা রুজু করে। তিন তিনবার জামিনের আবেদন করেও মুক্তি পাননি তিহার জেলে বন্দি থাকা সফুরা।
অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সত্ত্বেও শারীরিক কারণে তার আবেদন যাতে মঞ্জুর করা না হয় তা নিয়ে দিল্লি পুলিশ আদালতে সওয়াল করে। সেই সময় পুলিশের যুক্তি ছিল তিহর জেলে গত দশ বছরে ৩৯ জনের প্রসব হয়েছে। ফলে অন্তঃসত্ত্বা হলেই যে তাকে জামিন দিতে হবে এমনটা হওয়া উচিত নয়। জেলে করোনা আক্রান্তের সম্ভাবনা রয়েছে সফুরার, সে অন্তঃসত্ত্বা এমনটাই জানিয়েছিল সফুরার আইনজীবী। কিন্তু দিল্লি পুলিশ এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেই জামিনের বিরোধিতা করেছিল।
তবে, এদিন দিল্লি পুলিশের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা জানিয়েছেন, ‘মানবিক কারণে’ সফুরার জামিন হতে তাতে কোনও আপত্তি নেই। তবে, সফুরা যাতে দিল্লির বাইরে না যেতে পানে সেই শর্ত আরোপের জন্য আদালতে আবেদন করেন তুষার মেহেতা।
সফুরার আইনজীবী নিত্যা রামকৃষান বলেন, তার মক্কেলের স্বামী এবং চিকিৎসক দু’জনেই দিল্লির বাইরে রয়েছেন। কিন্তু বিচারপতি সেই আপত্তিতে সাড়া দেয়নি। বরং জানিয়ে দেন, দিল্লির বাইরে যেতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে সফুরাকে।
তদন্তকারীদের সঙ্গে মোবাইলে অন্তত ১৫ দিনে একবার যোগাযোগ রাখতে হবে। দিল্লি পুলিশের তদন্তে বাধাও দেওয়া যাবে না কিংবা কোনওভাবে প্রভাবিত করা যাবে না, এমনও নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সফুরাকে আদালতের তরফে। সেই সঙ্গে আদালত এও জানিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন এই জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে এই নির্দেশকে যেন আগামী দিনে নজির হিসেবে গণ্য না করা হয়।