সচিন কাঁদলেও হাসবেন রতন টাটা

দু’জনই খেলোয়াড়, একজন ক্রিকেট মাঠের অন্যজন ব্যবসা মাঠের। কিংবদন্তি ভারতীয় ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকর এবং ভারতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি রতন টাটাকে বর্তমানে এক সুতোতে বেঁধে ফেলেছে ব্যবসা জগৎ-ই।  ১৩ অগস্ট তালিকাভুক্ত হচ্ছে, শিশু পোশাকের ই-কমার্স ইউনিকর্ন, ‘ফার্স্টক্রাই’। সচিন এবং রতন টাটা, দুজনেই ফার্স্টক্রাই-এর শেয়ারহোল্ডার। কিন্তু, আইপিও লঞ্চ করার সঙ্গে সঙ্গে সচিন তেন্ডুলকরের যেখানে ১০ শতাংশ পর্যন্ত লোকসান হবে, সেখানে ৫ গুণ লাভ করতে চলেছেন রতন টাটা। তবে শুধু সচিন একাই নন, লোকসানের মুখে পড়তে চলেছেন, হর্ষ মারিওয়ালার শার্প ভেঞ্চার্স, মণিপাল গ্রুপের রঞ্জন পাই এবং ফায়ারসাইড ভেঞ্চার্সের প্রতিষ্ঠাতা কনওয়ালজিৎ সিং-ও।

তবে, শুধু রতন টাটা এবং মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা লিমিটেডই নয়, ফার্স্টক্রাইয়ের অধিকাংশ বিনিয়োগকারীই লাভ করতে চলেছেন। সে তিনি আইপিওতে শেয়ার বিক্রি করুন, বা না করুন। প্রেমজি ইনভেস্ট যেমন ২৮০.৮৭ টাকা দরে শেয়ার কিনেছিল। তারা অন্তত ৫৭ শতাংশ লাভ করতে চলেছে। ৮৬ লক্ষ শেয়ার বিক্রি করছে তারা।

সচিনদের এই ক্ষতির কারণ, তাঁরা প্রত্যেকেই ফার্স্টক্রাইয়ের শেয়ার কিনেছিলেন ৪৮৭.৪৪ টাকা করে। আর, আইপিও-এর জন্য কোম্পানির প্রাইস ব্যান্ড রাখা হয়েছে ৪৪০ থেকে ৪৬৫ টাকার সেট করা হয়েছে। অর্থাৎ, তাঁরা যে দামে ফার্স্টক্রাইয়ের শেয়ার কিনেছিলেন, সংস্থার আইপিও প্রাইস ব্যান্ড তার তুলনায় কম রয়েছে। তাই এই বিনিয়োগকারীদের এতটা ক্ষতি হতে চলেছে। তবে, সচিনরা কেউই আইপিওতে তাদের শেয়ার বিক্রি করছেন না। সংস্থাটির সম্ভাবনার উপর তাঁরা যে দীর্ঘমেয়াদে আস্থা রাখছেন, এটা তারই ইঙ্গিত।


অন্যদিকে, টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, রতন টাটার হাতে ফার্স্টক্রাই-এর ৭৭,৯০০টি শেয়ার রয়েছে। এগুলি তিনি গড়ে ৮৪.৭২ টাকা করে কিনেছেন। আইপিও প্রাইস ব্যান্ড যা রাখা হয়েছে, তাতে তিনি ৫ গুণ লাভ করতে চলেছেন। আইপিও-র জন্য সংস্থার ফাইলিং-এ আইপিওতে কিন্তু, বিক্রয়কারী শেয়ারহোল্ডার হিসেবেই তালিকাভুক্ত হয়েছে রতন টাটার নাম। তাঁর মতোই আরেক লাভবান হল মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা লিমিটেড সংস্থাও। তারা ফার্স্টক্রাইয়ের শেয়ার কিনেছিল ৭৭.৯৬ টাকা করে। ফলে তাদের লাভ হতে চলেছে প্রায় ৬ গুণ।

গত বছর সফটব্যাঙ্ক এবং ফার্স্টক্রাই-এর প্রতিষ্ঠাতা সুপম মহেশ্বরীর মতো শেয়ারহোল্ডাররা, তাদের হোল্ডিংয়ের একটি অংশ বিক্রি করেছিলেন। সেই সময়ই সচিন তেন্ডুলকর এবং তাঁর স্ত্রী, অঞ্জলি, ফার্স্টক্রাই-এর ২ লক্ষের বেশি শেয়ার কিনেছিলেন। এছাড়া, মারিওয়ালার শার্প ভেঞ্চার্স কিনেছিল ২০.৫ লক্ষ শেয়ার, রঞ্জন পাই কিনেছিলেন ৫১.৩ লক্ষ শেয়ার, কানওয়ালজিৎ সিং ৩ লক্ষের কিছু বেশি, ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস গোপালকৃষ্ণাণ কিনেছিলেন ৬.১৫ লক্ষ এবং ডিএসপি-র প্রতিষ্ঠাতা হেমেন্দ্র কোঠারি কিনেছেন ৮.২ লক্ষ শেয়ার। তাঁরা প্রত্যেকেই ক্ষতির মুখে পড়ছেন।