হায়দরাবাদ– সেদিন, ২৩ মার্চ ইডেনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে ওপেনিং নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি৷ তিনজন ক্রিকেটারের মধ্যে থেকে একজনকে বাইরে যেতে হবে৷ তিনি কে! কাকে বাইরে রেখে দুজনকে ওপেনিংয়ে পাঠানো হবে! ম্যাচের আগেরদিন বিকলেও কেকেআর এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি৷ বিকেলে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে এসে অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার বলেছিলেন, আমরা এ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি৷ বুঝতে পারছি না কাদের ওপেনে পাঠানো হবে৷ আমাদের তিনজন আছে৷ তাদের মধ্যে থেকে কোন দুজন ওপেনে যাবে, তা পরে আলোচনা হবে৷
এ কথা বলে শ্রেয়াস দলের সঙ্গে প্র্যাকটিসে নেমে পডে়ন৷ ম্যাচের দিন দেখা গেল ফিল সল্টের সঙ্গে সুনীল নারাইনকে ওপেনে পাঠানো হয়েছে৷ তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার৷ তা হলে ইডেনের পুরনো ছবি কি বেঙ্গালুরুর মাঠে আবার দেখা যাবে! নাকি এবার ছক বদল হতে পারে! এদিন বিকেল পর্ষন্ত এ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানা যায়নি৷ তবে শোনা যাচ্ছে ওপেনিংয়ে বদল আসতে পারে৷ গম্ভীর এ নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন৷ এমনও হতে পারে নারাইনকে মিডল অর্ডারে নিয়ে এসে সল্টের সঙ্গে ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে ওপেনে পাঠানো হতে পারে৷
হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে সল্ট ভাল খেলেছিলেন৷ বাকিদের সেভাবে চোখে পডে়নি৷ কেউ নয়! সে নারাইন, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, শ্রেয়াস আইয়ার, নীতিশ রানা, না কেউ নন৷ একসময় ১১৯ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট চলে গিয়েছিল৷ স্লট হাফ সেঞ্চুরি করে আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার পরও দলের চেহারায় বদল আসেনি৷ শেষে রিঙ্কুকে সঙ্গে নিয়ে রাসেল মাঠে ঝড় না তুললে ম্যাচ বের করে আনা কঠিন হত৷ রাসেলের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পরও কোনরকমে ম্যাচ জেতে কেকেআর৷ যদি রাসেলের ব্যাট চওড়া না হত তা হলে কেকেআর অনেক আগে ম্যাচ থেকে হারিয়ে যেত৷ যাক, যা হয়নি তা নিয়ে কথা বলে লাভ নেই৷ কেকেআর জিতে পুরো পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেডে়ছে, এটাই শেষ কথা৷ বারবার এমন তো হতে পারে না৷ রাসেল সব ম্যাচে দলকে টানবেন, এটাই বা মেনে নেওয়া যায় নাকি! তাই বিরাট কোহলিদের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে আবার ব্যাটিং নিয়ে কাঁটাছেড়া চলছে৷ সেই হিসেবে নারাইনকে নিচে নামিয়ে এনে ভেঙ্কটেশকে ওপেন পাঠাতে চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট৷
নারাইন মিডলঅর্ডারে আসা মানে ছয় বা সাত নম্বরের আগে খেলবেন না৷ তাঁর আগে শ্রেয়াস, নীতিশ, রিঙ্কু, রাসেলরা নামবেন৷ সাচ নম্বরে নারাইনকে ধরে রাখা হয়েছে৷
বোলিংয়ে পরিবর্তনের ছবি ধরা পড়ছে না৷ মিচেল স্টার্কের উপর দলের অনেক ভরসা৷ তিনি ইডেনে সুবিধা করতে পারেননি৷ দুটি স্পেলে বল করতে এসে মার খেয়েছেন৷ তার উপর বেঙ্গালুরুর মাঠ ছোট৷ একটু জোরে স্ট্রোক নিয়ে বল গ্যালারিতে গিয়ে পড়বে৷ সেদিকে নজর রাখতে হবে৷ তিন স্পিনারের সঙ্গে দুই পেসার নিয়ে কেকেআর খেললেও ছয় নম্বর বোলার হিসেবে পেয়ে যাবে রাসেলকে৷ কিন্ত্ত উল্টোদিকের দলে ফাফ, বিরাটস ম্যাক্সওয়েলের মতো ক্রিকেটার আছেন৷ তাঁরা যে কোনও সময় ম্যাচের রঙ্গ বদলে দিতে পারেন৷ আগের ম্যাচে বিরাট রান পেয়েছেন৷ তাঁর ৪৯ বল-এ ৭৭ রান দলকে ভরসা দিয়েছে৷ তবে যে ক্রিকেটারের কথা বলা হয়নি, তিনি হলেন দীনেশ কার্তিক৷ স্লগে দারুন ব্যাট করছেন৷ ল্যাপ শট মেরে বোলারদের ঘাডে় চেপে বসেন৷ তাই ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়ের দিকেও বাড়তি নজর দিতে হবে কেকেআরকে৷ কারন ঘরের মাঠে এর আগে রাসেল ঝডে় আরসিবি হেরে গিয়েছে কেকেআরের কাছে৷ তার পুনরাবৃত্তি আবার কেন হতে পারে না৷ হতেই পারে৷ কিন্ত্ত বারবার শুধু রাসেলের কথা উঠে আসবে কেন! এবার অন্যদের দায়িত্ব নিতে হবে৷
এই ম্যাচে সব থেকে বড় ঘটনার কথা এখনও বলা হয়নি৷ তিনি হলেন যশ দয়াল৷ তাঁর এক ওভারে পরপর পাঁচটি ওবার বাউন্ডারি মেরে রিঙ্কু যেমন আলোচনায় উঠে এসেছিলেন, তেমনই যশ দয়ালকে নিয়ে কম কথা হয়নি৷
এবার কি পাল্টা দেখা যাবে৷ সেদিনের বদলা এবার কি যশ নিতে পারবে৷ নাকি আবার রিঙ্কুর কাছে তিনি হার মানবেন৷ শুক্রবারের ম্যাচে এটাও কিন্ত্ত দেখার মতো ছবি
হতে পারে৷