চাকরিরত মহিলাদের জীবনে সমস্যার অভাব নেই। তারপর তিনি যদি হন মা তাহলে তো পদে-পদে সমস্যা। অফিসে থেকে বাড়ি তার কাছে সবসময় বিরাট চ্যালেঞ্জ নিয়ে দাঁড়িয়ে। সেই চ্যালেঞ্জগুলি যে কতটা পরিশ্রমের কতটা যন্ত্রণার তাই এবার গোটা বিশ্বের কাছে জানাল, এওএন নামে একটি আন্তর্জাতিক পেশাদারি সংস্থা। সংস্থাটি ভয়েস অফ উওমেন স্টাডি ২০২৪ শীর্ষক সমীক্ষায় এই তথ্য দিয়েছে।
দেশের প্রায় ৫৬০টি কোম্পানির ২৪ হাজার মহিলাকে নিয়ে সমীক্ষাটি করা হয়েছে। রিপোর্টে রয়েছে, সমীক্ষায় অংশ নেওয়া অর্ধেক মহিলা কর্মক্ষেত্রে পক্ষপাত ও বৈষম্যের শিকার হওয়ার কথা স্বীকার করেন।
কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি, অবসর এবং স্বাস্থ্য সমাধান নিয়ে পরিষেবাদানকারী সংস্থা এওএনের একটি সমীক্ষায় এই তথ্য ধরা পড়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতে কর্পোরেট সেক্টরে কর্মরত মায়েদের নানান চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সঙ্কট হল, চাকরিক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে মাতৃত্বকালীন ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া। একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতীয় মহিলাদের ৭৫ শতাংশ কর্মরত মহিলাকে মাতৃত্বকালীন ছুটির শেষে কাজে যোগ দেওয়ার পর এক থেকে দুবছর ক্যারিয়ার বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়। এওএন বলছে, এই মহিলাদের অন্তত ৪০ শতাংশ, যাঁরা মাতৃত্বকালীন ছুটির পর বেতন কাটা অথবা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে অথবা তাঁদের পদমর্যাদা ও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। এমনকি তাদের এমন কাজ দেওয়া হয়েছে, যা তাঁদের পছন্দ নয়। সমীক্ষা রিপোর্ট বলেছে, কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিরন্তর পক্ষপাত ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়।
বেতন ও ইনসেনটিভের ক্ষেত্রেও এই আচরণের শিকার হন ৩৭ শতাংশ মহিলা। কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্তার কথা মেনে নিয়েছেন ৬ শতাংশ। যার মধ্যে অর্ধেকেরও কম ক্ষেত্রে সরকারিভাবে অভিযোগের স্তরে আসে।
কর্মজীবনে পদোন্নতির ক্ষেত্রে লিঙ্গ-বৈষম্য বা পক্ষপাতদুষ্টতা থাকে। অভিজ্ঞতার নিরিখে মহিলারা এগিয়ে থাকলেও তাঁদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ ঘটে থাকে। রিপোর্টে কোম্পানিগুলির ও শীর্ষ নেতাদের কাছে আর্জি রাখা হয়েছে যেন নীতিগত ও প্রয়োগগত দিক থেকে এ বিষয়গুলিতে পদক্ষেপ করতে। বিশেষত সমহারে বেতন, পদোন্নতি এবং মাতৃত্বকালীন সুবিধার ক্ষেত্রে।