ফের র‌্যানসামওয়্যারের কব্জায় ৩০০ ব্যাঙ্কের পরিষেবা, বন্ধ ইউপিআই লেনদেনও

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

দিল্লি, ১ আগস্ট — এবার হ্যাকারদের তান্ডবে বিপর্যস্ত দেশের অন্তত ৩০০ গ্রামীণ ও সমবায় ব্যাঙ্ক! যার জেরে কয়েক লক্ষ গ্রাহকের পরিষেবা প্রায় বন্ধ। এই ব্যাংকগুলির সফটওয়্যারে র‌্যানসামওয়্যার ঢুকে পড়ায় আপাতত ব্যাঙ্কগুলির গ্রাহকদের ইউপিআই পেমেন্ট প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ অনলাইনে লেনদেনও। ‘আক্রান্ত’ ব্যাঙ্কগুলির গ্রাহকদের সমস্ত তথ্যই নাকি হ্যাকারদের হাতে পৌঁছে যেতে পারে। তবে এ বিষয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। কোনো কিছুই বলতে নারাজ দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একধরনের ডিজিটাল অপহরণ। কারণ র‌্যানসমওয়্যার এমনই এক ধরনের ম্যালওয়্যার, যা গ্রাহকের কম্পিউটারে প্রবেশ করে সবকিছুর অ্যাকসেস পেয়ে যায়। সমস্ত ফাইল এনক্রিপ্ট করে। এরপর তথ্য এবং অ্যাকসেস ফেরানোর জন্য মুক্তিপণ দাবি করে।সিস্টেম ব্রিচ ধরা পড়ার পর গত দু’দিন ধরে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সি-এজ টেকনোলজি।

এনপিসিআই-এর একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতে প্রায় দেড় হাজার সমবায় এবং আঞ্চলিক ব্যাঙ্ক রয়েছে। যেগুলির বেশির ভাগই বড় শহরের বাইরে কাজ করে। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই ছোট ব্যাঙ্ক। এই সাইবার হানার ফলে দেশের মোট লেনদেন পরিষেবার খুব ছোট অংশই প্রভাবিত হয়েছে। এনপিসিআই একটি অডিট করছে যাতে এই হানা ছড়িয়ে না পড়ে।


রয়টার্স সূত্রে খবর, এই ব্যাঙ্কগুলিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা করে সি-এজ টেকনোলজি নামে একটি সংস্থা। তাদের সফটওয়্যারেই হ্যাকার হানা হয়েছে বলে প্রাথমিক সূত্রে খবর। তবে তাদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে যারা ইউপিআইয়ের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন বিষয়টি দেখে সেই ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এনপিসিআই নিয়ন্ত্রিত খুচরো লেনদেন ব্যবস্থা থেকে আপাতত সি-এজ টেকনোলজিকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। যে সমস্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা সি-এজ টেকনোলজির পরিষেবা ব্যবহার করেন, তারা আপাতত ইউপিআই লেনদেন করতে পারবেন না।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই আরবিআই ব্যাঙ্কগুলিকে সাইবার হানা নিয়ে সতর্ক করেছিল।  দেশের টাকা আদানপ্রদানকারী নেটওয়ার্ক পরিষেবা থেকে ওই ব্যাঙ্কগুলিকে সাময়িক ভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এনপিসিআই আরও জানিয়েছে, যে সকল ব্যাঙ্ক ‘সি-এজ় টেকনোলজি’ থেকে প্রযুক্তি ব্যবহার করত তাদের উপভোক্তারা সাময়িক ভাবে টাকা আদানপ্রদান করতে পারবেন না।

প্রসঙ্গত, আরবিআই এবং তথ্য প্রযুক্তি দফতর গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সম্ভাব্য সাইবার হানা সম্পর্কে সতর্ক করছিল ব্যাঙ্কগুলিকে। এরই মধ্যে বুধবার রাতে এই কাণ্ড ঘটে গেল। এখন ৩০০ ব্যাঙ্কের পরিষেবা কখন ঠিক হয়, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।