অযোধ্যা, ১৯ জানুয়ারি– ভক্তিতে বলুন বা পূণ্যের লোভে বা পাপ ক্ষয়ের আশায় আমরা মন্দিরে বা ঈশ্বরকে নানান সামগ্রী উৎসর্গ করি৷ সেই উৎসর্গীকৃতের তালিকায় রয়েছে নানা জিনিস৷ ফল-ফুল থেকে শুরু দামি ধাতু যেমন সোনা-রূপা প্রভৃতি থাকে ঈশ্বরকে উৎসর্গের তালিকায়৷ তবে বর্তমানে এই উৎসর্গ করার চলটা যেন একটু বেশি৷ বিশেষ করে দেশের নানান বিখ্যাত সব মন্দিরে তো যেন অর্থ বা দামি ধাতু দানের প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে মানুষের মধ্যে৷ এই যেমন ধরুন তিরুপতির পদ্মনাভাস্বামী, ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দির, দিল্লির শ্রী সিদ্ধশক্তিপীঠ, লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির,
কাঠমাণ্ডুর পশুপতিনাথ মন্দির প্রভৃতি মন্দিরে ভক্তের দানের পরিমান এতটাই বেশি যে তার হিসেব রাখতে বা গুনতে দিনের পর দিন লেগে যায় বহু মানুষের৷ বলা হয় এই মন্দিরগুলিতে যে পরিমান সোনাদানা গচ্ছিত আছে তা সরকারের কোষাগারে গেলে তা মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে গোটা ভারতের অর্থনীতির৷ কিন্ত বিধি বাম৷ সেই অর্থ বা সোনা ছুঁতেও মানা৷ তবে অযোধ্যায় নব নির্মিত রামমন্দিরে সোনা থেকে শুরু কর যে সব মূল্যবান সামগ্রী দানে আসবে তা কিন্তু ঢুকবে কলকাতায়৷ শুনে অবাক হচ্ছেন তো! এমনটাই নিয়ম৷
আসলে রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট এবং কেন্দ্রের সরকার তথা অর্থ মন্ত্রক স্থির করেছে, এই মন্দিরে দানের বহু মূল্যবান সব ধাতু কলকাতার ট্যাঁকশালে নিয়ে যাওয়া হবে৷ আর সিদ্ধান্তেই কলকাতার ট্যাঁকশালের দুই বুলিয়ন অ্যাকাউন্ট্যান্ট সুজয় বড়ুয়া ও মলয় দত্ত ইতিমধ্যেই পেঁৗছে গিয়েছেন অযোধ্যায়৷ পনেরো দিনর অযোধ্যায় থেকে ভক্তদের দানে যত মূল্যবান ধাতু এখানে জমা পড়বে, তার একটা প্রাথমিক হিসাব করাই তাদের কাজ৷ তার পর সেগুলো আলিপুরে বর্তমান ট্যাঁকশালে পাঠিয়ে দেওয়ার পর তাদের দায়িত্ব শেষ৷
সূত্রের খবর, এইসব মূল্যবান ধাতু কলকাতার ট্যাঁকশালে আসার পর সেগুলিকে পাঠানো হবে এখানকার রিফাইনারিতে৷ সেখানে বিভিন্ন ধাতু আলাদা করে সেগুলো গলিয়ে ফেলা হবে৷ তার পর সেগুলিকে ধাতব ‘বার’-এ পরিণত করা হবে৷ রামমন্দিরে থেকে আসা ধাতুগুলির মান নির্ধারণ করা হবে এখানে৷ অর্থাৎ ২৪ ক্যারেটের খাঁটি আবার কোনটা তার থেকেও কম বিচার করে সব ধাতু গলিয়ে খাঁটি ধাতু কতটা পাওয়া যায় তার মূল্যায়ন হবে৷ সেই খাঁটি সোনাই বার হিসাবে রাখা হবে৷ তাই ধাতুগুলো গলানোর আগে ট্যাঁকশালের অ্যাসেসমেন্ট বিভাগ সেগুলো মূল্যায়ন করে দেখবে৷ তারপর সেগুলি চলে যাবে
উল্লেখ্য, কলকাতা ট্যাঁকশালের ধাতু গলানোর বহুকালের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতেই শুধু অযোধ্যার সমাগ্রী এখানে আসছে তা কিন্তু নয় প্রত্যক্ষ কর দফতর তথা কাস্টমস যে সব সোনা দানা বাজেয়াপ্ত করে, সেগুলো মামলার নিষ্পত্তির পর ভারত সরকারের সম্পত্তি হয়ে যায়৷ এই সব মূল্যবান ধাতুও কলকাতা ট্যাঁকশালে যায়৷ তার পর সেখানে গলিয়ে বার বানিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷