দিল্লি, ১৭ জুন – দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকের সংশোধনী নিয়ে সরব হল বিরোধীরা। অযোধ্যা ও বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত সংশোধনী নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে দেশের বিরোধী মহলে। ইতিহাসে বিকৃতি এবং শিক্ষায় গেরুয়াকরণের অভিযোগ তুলে সমালোচনা করা হয়েছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং তথা এনসিইআরটি-কে। এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন রাম জন্মভূমি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্র দাস মহারাজ। এই সংশোধনী নিয়ে তাঁর অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন তিনি। এই অসন্তোষ এনসিইআরটি’-র বিরুদ্ধে। কারণ পাঠ্য বিষয়ে অযোধ্যা আন্দোলনকেই বাদ দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
পুরনো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে অযোধ্যা ও বাবরি মসজিদের ইতিহাস সংক্রান্ত বিবরণ নিয়ে চার পাতা লেখা ছিল। নতুন বইয়ে তা এসে দাঁড়িয়েছে দুই পাতায়। সংশোধনীতে গুজরাটের সোমনাথ থেকে বিজেপির রথযাত্রা, বাবরি মসজিদ ধ্বংস, সাম্প্রদায়িক অশান্তি , তৎকালীন উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির মতো বিষয়গুলি বাদ দেওয়া হয়েছে। এমনকী, ‘বাবরি মসজিদ’ শব্দটিও নতুন পাঠ্যপুস্তকে ব্যবহার করা হয়নি।গোটা বিষয়টি নিয়েই ‘অসন্তুষ্ট’ রাম জন্মভূমি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্র দাস মহারাজ।
দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে বাবরি মসজিদ প্রসঙ্গে আগে লেখা ছিল ১৬০০ শতাব্দীতে মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মির বাকি এই মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের অধীন স্বশাসিত সংস্থা এনসিইআরটি যে নতুন সিলেবাস প্রকাশ করেছে সেখানে বাবরি মসজিদের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এই বিষয়ে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে এনসিআরটির ডিরেক্টর দীনেশ প্রসাদ সাকলানি বলেছেন, ‘আমরা চাই, আমাদের নাগরিকদের মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠুক। এটাই আমাদের পাঠ্যপুস্তকের উদ্দেশ্য। আমাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য, উগ্র মানসিকতার নাগরিক তৈরি করা নয়। পাঠ্যপুস্তকের ওইসব অংশ উগ্র ও হতাশাগ্রস্ত নাগরিক সমাজ তৈরি করতে পারে।’
১৯৯২ সালে অযোধ্যা থেকে বাবরি মসজিদে প্রথম আঘাত হানে কর সেনারা। এখন সেখানে বাবরির অস্তিত্ব মুছে দিয়ে গড়ে উঠেছে রাম মন্দির। এবার এনডিএ সরকারের আমলে এনসিইআরটি দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্য থেকেও মুছে দেওয়া হল বাবরির অস্তিত্ব। এই বিষয়ে সংবাদসংস্থা এএনআই–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাম জন্মভূমি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্র দাস মহারাজ এই বিষয়ে তাঁর অসন্তোষ প্রকাশ করেন।