ভদোদরা, ২০ এপ্রিল– গুজরাতের রাজকোট আসনের বিজেপি প্রার্থী পারষোত্তম রুপালাকে বদলের দাবি তুলেছে রাজ্যের রাজুপত সমাজ৷ গোটা রাজপুত সমাজ বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ ঘটনার সূত্রপাত পারোষোত্তম রুপালার সাম্প্রতিক ভাষণ৷ নির্বাচনী প্রচারে পাতিদার সমাজের মুখ এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘বহু রাজপুত রাজা ব্রিটিশের সঙ্গে বোঝাপড়া করে সাম্রাজ্য রক্ষা করেছেন৷’ এই মন্তব্যে চটেছেন আপোসহীন, বীর জাতি বলে পরিচিত রাজপুরত তথা ক্ষত্রিয়রা৷ তারা রাজকোট আসনের বিজেপি প্রার্থীকে বদলের দাবি তোলেন৷ কিন্ত্ত বিজেপি সেই দাবি মানতে নারাজ৷ কারণ রুপালা গুজরাত বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্নেনধন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ ফলে পদ্ম শিবিরের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাতে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজপুত সমাজের৷
সংঘাত এমন জায়গায় পেঁৗছেছে যে, রাজ্যের রাজপুত সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী নেতারা গুজরাতের ২৬ আসনেই বিজেপিকে হারানোর ডাক দিয়েছে৷ তাঁরা বলেছেন, দেশের ২৫ কোটি রাজপুত এককাট্টা৷ আমরা দেখিয়ে দিতে চাই কী করতে পারি৷ এখানেই না থেমে শনিবার থেকে রাজপুত মহিলারা রাজ্যের নানা জায়গায় রিলে অনশনে বসেছেন৷ ৭ মে রাজকোট আসনে ভোট৷ ওই দিন পর্যন্ত রিলে অনশন চলবে বলে জানানো হয়েছে৷ এছাড়া রাজপুত সম্প্রদায়ের নেতারা রাজ্যব্যাপী রথযাত্রার আয়োজন করছেন৷ তাঁরা বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদের পাশাপাশি রাজপুত সমাজের অবদান তুলে ধরবেন৷
রুপালাকে বদলে বিজেপির অন্য বিপদ আছে৷ তাতে পাতিদার সমাজ বিদ্রোহ করতে পারে৷ গুজরাতের জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ নিম্নবিত্ত পাতিদার সমাজের অংশ৷ রাজপুত কো-অর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক করণসিং চাভদা জানিয়েছেন, রাজপুত সম্প্রদায়ের নেতারা একত্রে বসে সিদ্ধান্ত করেছেন, গুজরাতের ২৬ আসনে বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাবে রাজপুতেরা৷ তিনি বলেন, ‘বিজেপি দেশের ২৫ কোটি রাজপুতের ভাবাবেগকে গুরুত্বই দিচ্ছে না৷’
তবে রাজপুতদের এই আন্দোলন তথা বিজেপি হারাও ডাকের পরও মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপি নেতারা৷ যদিও পার্টি নেতারা একান্তে মানছেন, রাজ্যের ৭ শতাংশ রাজপুত ভোট পাটন, বসন্তকাঁটা, ভারুচ, সবরকান্তা, সুরেন্দ্রনগর, রাজকোট, ভাবনগর এবং জামনগর আসনে যথেষ্ট বেগ দিতে পারে৷ এমনকী তারা বিজেপিকে হারিয়ে দেওয়ার শক্তি ধরে৷ বাকি আসনগুলিতেও বাড়তি সুবিধা পেয়ে যেতে পারে কংগ্রেস৷ গুজরাতে রাজপুত ও পাতিদারদের লড়াই নতুন নয়৷ রাজপুতরা জনসংখ্যার সাত শতাংশ হলেও রাজ্যের সিংহভাগ এলাকা একটা সময় ওই সম্প্রদায়ের রাজা-মহারাজার দখলে ছিল৷