পরিবারতন্ত্রের রাজনীতিতে ভােগা কংগ্রেসের রাহুল গান্ধির পক্ষে কোনভাবেই কঠোর পরিশ্রমী নরেন্দ্র মােদির মােকাবিলা করা সম্ভব নয়, কেরালার কোজিকোডে একটি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে এমন বিস্ফোরক কথাই বললেন বিশিষ্ট ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ। পাশাপাশি রাহুল গান্ধিকে নির্বাচন করে সংসদে পাঠানাের জন্যে কোলের মানুষকেও দুষলেন তিনি।
ভারতে হিন্দুত্ববাদ এবং অলৌকিকতাবাদের উত্থানের কারণেই স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ের ‘মহান দল’ কংগ্রেস এখন ‘পারিবারিক সম্পত্তি’ হয়ে গেছে বলে মনে করেন রামচন্দ্র গুহ। নরেন্দ্র মােদির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল তিনি রাহুল গান্ধির মতাে নন, নিজেকে নিজেই তৈরি করেছেন তিনি, বলেন ওই ঐতিহাসিক।
‘দেশপ্রেম বনাম অন্ধ জাতীয়তাবাদ’ শীর্ষক বিষয় নিয়ে কোলা সাহিত্য উৎসবের দ্বিতীয় দিনে আয়ােজিত এক অধিবেশনে রামচন্দ্র গুহ বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে রাহুল গান্ধির বিরােধী নই। তিনি ভদ্র ও সচ্ছল মানুষ, তবে এটা সত্যি কথা যে দেশের তরুণ প্রজন্ম লাগাতার রাজত্ব করে যাওয়া রাজতন্ত্রের মতাে কোনও বংশের পঞ্চম পুরুষকে চায় না। ২০২৪ সালেও কেরলবাসী যদি আবার রাহুল গান্ধিকেই বেছে নেওয়ার মতাে ভুল করেন, তবে তারা ঘুরপথে আসলে সম্ভবত নরেন্দ্র মােদিরই সুবিধা করে দেবেন। জঙ্গি দেবেন্দরকে চুপ করানাের সহজ পন্থা…।
ডিএসপি গ্রেফতারি প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধি কোজিকোডে আয়ােজিত সাহিত্য উৎসবে উপস্থিত জনতাকে লক্ষ করে ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ বলেন, ‘কেরালা, ভারতের জন্যে অনেক বিস্ময় কাজ করেছেন, কিন্তু রাহুল গান্ধিকে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠানাের সিদ্ধান্ত আপনাদের জন্যে একটি বিপর্যয় সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ ছিল’।
২০১৯ সালের লােকসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের আমেঠিতে হেরে যান রাহুল গান্ধি। কিন্তু কেরালার ওয়ানাড আসন থেকে জিতে কোনক্রমে মুখ রক্ষা করেন তিনি।
রামচন্দ্র গুহ বলেন, ‘নরেন্দ্র মােদির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল তিনি রাহুল গান্ধি নন। তিনি নিজেই কষ্ট করে, পরিশ্রম করে দেশের প্রধানমন্ত্রী পদ অর্জন করেছেন। এর আগে তিনি ১৫ বছর ধরে একটি রাজ্য পরিচালনা করেছেন এবং প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি উল্লেখযােগ্যভাবে কঠোর পরিশ্রম আগেও করেছেন, এখনও করেন। তিনি কথায় কথায় ইউরােপে ছুটি কাটাতে যান না। বিশ্বাস করুন, আমি এসব দায়িত্ব নিয়েই বলছি’।
পাশাপাশি কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধিকে লক্ষ করেও বাক্যবাণ ছোঁড়েন ওই ঐতিহাসিক। সােনিয়ার অবস্থানকে ‘মােগল রাজবংশের সমাপ্তি’র সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।