বিধানসভা নির্বাচনের আগে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে প্রাক-নির্বাচন জোট চূড়ান্ত করতে জম্মু-কাশ্মীরে গেলেন রাহুল গান্ধি এবং কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। বুধবার বিকেলে কংগ্রেসের এই দুই শীর্ষ নেতা শ্রীনগরে পৌঁছন। শ্রীনগরে স্থানীয় দলীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি রাজ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়েও আলোচনা হবে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বৃহস্পতিবার তাঁদের দুজনেরই জম্মু যাওয়ার কথা। কংগ্রেস এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স দুই দলই কৌশলগত প্রাক-নির্বাচন জোট নিয়ে আলোচনায় বসছে। উভয় দলেরই নজর থাকছে জম্মুতে। কারণ বিজেপির দাবি, তারা জম্মুতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। সেদিক থেকে রাহুল-খাড়গের এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
কংগ্রেস হাইকমান্ডের সঙ্গে ন্যাশনাল কনফারেন্সের আসন সমঝোতার বিষয়টি এক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা বলেছেন তাঁর দল ভোটের আগে আসন সমঝোতায় পক্ষপাতী নয়। অন্যদিকে ফারুকের পুত্র রাজ্যের আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়ায় আগ্রহী। ওমর দলের সহ-সভাপতি হলেও বকলমে তিনিই পার্টি চালাচ্ছেন। রাহুল এবং খাড়গে তাঁর সঙ্গে শ্রীনগরে বৈঠক করবেন বলে স্থির আছে।
দলীয় সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি রাহুল গান্ধির দেশব্যাপী ভারত জোড়ো যাত্রা শ্রীনগরে শেষ হওয়ার পর থেকে কংগ্রেসের প্রতি সমর্থনের একটি ভিত্তি তৈরি হয়েছে ৷ এআইসিসি নেতা গুলাম আহমেদ মীর বলেন, “জম্মু ও কাশ্মীরে কংগ্রেসের প্রবল উপস্থিতি রয়েছে। সংকীর্ণ রাজনৈতিক লাভের জন্য কোনও দলের সঙ্গে কখনও আপোস করা হবে না। আমাদের শীর্ষ নেতাদের এই সফর ভোটার এবং কর্মীদের কাছে অবশ্যই একটি সদর্থক বার্তা পৌঁছে দেবে ৷”
দশ বছর পর জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার নির্বাচন হতে চলেছে। বিধানসভা ভোটের পর জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার আভাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিজেপি এবার সেখানে আরও বেশি শক্তি নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে চাইছে। ২০১৪ থেকে ১৯ পর্যন্ত সেখানে পদ্মপার্টি এবং জম্মু-কাশ্মীরে স্থানীয় দল পিডিপির সরকার ছিল। পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, তাঁরা কোন বড় দলের সঙ্গে বোঝাপড়ায় যাচ্ছেন না
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি জম্মু-কাশ্মীরে মিত্র দলের সন্ধানে ফের রাম মাধবকে দায়িত্ব দিয়েছে। আরএসএসে বেড়ে ওঠা রাম মাধব মোদি জমানার শুরুতে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি আবার আরএসএস-এ ফিরে যান। তাঁকেই আবার বিজেপিতে গুরুদায়িত্ব দেওয়া হল। এছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জে কিষান রেড্ডিকেও উপত্যকার ভোটে দলের হয়ে কৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব দিয়েছেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, জম্মু এলাকায় বিজেপির এবার ভাল ফল করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বিপরীত ছবি কাশ্মীরে। ৩৭০ বিলোপের কারণে আঞ্চলিক কোন দলই পদ্ম শিবিরের সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি নয় । ৩৭০ বাতিলের পর এই প্রথম সেখানে বিধানসভার ভোট হতে যাচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনে মানুষ বিপুল সংখ্যায় ভোট দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে তারা নির্বাচিত সরকার পেতে আগ্রহী।
এদিকে সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে এনসি-র জোট ছিল। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।