• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

মাসুদ আজহারের মুক্তি নিয়ে মোদিকে বিঁধলেন রাহুল গান্ধি

পানিস্তানে আশ্রিত জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রসংঘ 'আন্তর্জাতিক জঙ্গি' ঘোষণা করার পর বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি।

রাহুল গান্ধি (Photo: IANS)

পানিস্তানে আশ্রিত জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রসংঘ ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ ঘোষণা করার পর বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি।

শুক্রবার রাজস্থানে নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমণী নরেন্দ্র মােদি মাসুদ আজহারকে নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন। শনিবার পাল্টা জবাব হিসাবে কংগ্রেস দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে মােদিকে এক হাত নিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি।

মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘােষণার পর ভােট মরসুমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির বাড়তি সুবিধা পাওয়ার চেষ্টায় জল ঢেলে সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল গান্ধি অভিযােগ করেন, ১৯৯৯-তে বিমান ছিনতাইয়ে অভিযুক্ত মাসুদ আজহারকে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে ছেড়ে দিয়ে তৎকালীন সরকার সন্ত্রাসের সঙ্গে আপস করেছিল। কিন্তু কংগ্রেস কখনই তা করেনি।

১৯৯৯ সালে জঙ্গিরা ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আইসি ৮১৪ বিমান আকাশপথে ছিনতাই করে আফগানিস্তানের কান্দাহার বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। সেখানে পণবন্দি করে রাখা হয় বিমান যাত্রীদের। শর্ত অনুসারে ভারত সরকারকে মাসুদ আজহারের সঙ্গে অন্য দুই জঙ্গি মুস্তাক আহমেদ জারগার এবং আহমেদ ওমর সহিদ শেখ মুক্তি দিতে হয়। একটি বিশেষ বিমানে করে তাদের কান্দাহার বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। ওই বিমানে ছিলেন তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী যশবন্ত সিং, সেই সময় আইবি প্রধান যিনি বর্তমানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং মধ্যস্থতাকারীদের একটি দল। তিন জঙ্গির মুক্তির বদলে বিমানটি ছেড়ে দেয় ছিনতাইকারীরা।

জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘােষণা না করার জন্য রাষ্ট্রসংঘের  কাছে একাধিকবার আবেদন করেছে ভারত। কিন্তু চিনের বাধায় সেই প্রক্রিয়া বারবার ভেস্তে যায়। কিন্তু পুলওয়ামা হামলায় জইশ-ই-মহম্মদের হাত থাকায় ভারত রাষ্ট্রসংঘের ওপর চাপ বাড়াতে থাকে মাসুদ ইস্যুতে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির দৌত্যের ফলেই মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ জঙ্গি ঘােষণা করা হয়েছে বলে দাবি করছে বিজেপি। এখানেই আপত্তি রয়েছে রাহুল গান্ধির। তিনি জানিয়েছেন, ‘মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কিন্তু এখানে একটা প্রশ্ন আছে, কারা তাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়েছিল? সন্ত্রাসের সামনে কারা মাথা নুইয়েছিল? কারা ওকে মুক্তি দিয়েছিল? সবটাই করেছে তৎকালীন বিজেপি সরকার, কংগ্রেস নয়।’

সন্ত্রাস নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করে রাহুল আরও বলেন, ‘বিজেপি সন্ত্রাসের সঙ্গে আপস করেছে। কংগ্রেস কাউকেই পাকিস্তানে ফেরত পাঠায়নি, কোনও দিন পাঠাবেও না। ক্ষমতায় এলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মােদি সরকারের চেয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেবে কংগ্রেস। প্রতিশ্রুতি রইল।’

লােকসভা নির্বাচনের মুখে বিরােধী নেতাদের বিপাকে ফেলতে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়েছে মােদি সরকার বলে একাধিকবার অভিযােগ তুলেছে কংগ্রেস সহ বিরােধীরা। মােদি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযােগ করে এসেছে তারা। সন্ত্রাস দমনেও সেই প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে মােদি বলে অভিযােগ তুলেছেন রাহুল গান্ধি। তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সন্ত্রাস দমনে পক্ষপাতি কংগ্রেস। বিজেপি সবটাই করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে।’