• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

শীর্ষ আদালতে রাফায়েল নথি নিয়ে কেন্দ্রের সাফাই ‘চুরি হয়ে গেছে…’

রাফায়েল চুক্তিতে দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীদের গলা ফাটানোর মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের তরফ থেকে জানান হল প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে রাফায়েল সংক্রান্ত সমস্ত নথি চুরি গেছে।

রাফায়েল যুদ্ধবিমান (Photo: iStock)

দিল্লি, ৬ মার্চ – রাফায়েল চুক্তিতে দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীদের গলা ফাটানোর মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের তরফ থেকে জানান হল প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে রাফায়েল সংক্রান্ত সমস্ত নথি চুরি গেছে। বুধবার রাফায়েল চুক্তি সংক্রান্ত শুনানির সময় নথি চুরির মতো চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতেই বিস্ময় প্রকাশ করেন অনেকে। অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল দাবি করেছেন, ‘বিরোধীরা চুরি যাওয়া নথিকে আদালতে প্রমাণ হিসাবে দাখিল করেছে, যা ফৌজদারি অপরাধের সমান’। রাফায়েল কেনার যৌক্তিকতা আদালতের কাছে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের এফ-১৬ মোকাবিলা করতে এবং সেই সঙ্গে দেশকে সুরক্ষিত রাখতে রাফায়েল যুদ্ধবিমান প্রয়োজন। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ মার্চ।

শীর্ষ আদালতে রাফায়েল নিয়ে শুনানির প্রথম দিনেই প্রতিক্রিয়া এল কংগ্রেসের তরফ থেকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার দাবি তোলা হয়েছে। ‘রাফায়েল চুক্তিতে দূর্নীতি এবং অতিরিক্ত সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার তথ্য দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে। জনগণের টাকায় দাসোল্ট অ্যাভিয়েশনকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁর দফতরকে কাজে লাগিয়েছেন’ বলে আজ অভিযোগ জানিয়েছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা।

ফ্রান্সের দাসোল্ট অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে ৩৬ টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রক। এই চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এবং আদালতের পর্যবেক্ষণে তদন্তের দাবি জানিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলায় ১৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রকে ক্লিনচিট দেয় শীর্ষ আদালত। মামলাকারীদের দুর্নীতির আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। এরপরই রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে ফের আদালতে মামলা হয়। বুধবার প্রধানবিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে রায় পুনর্বিবেচনার মামলার শুনানি শুরু হয়।

মামলার শুনানির প্রথমেই অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আদালতকে জানান, ‘প্রতিরক্ষা দফতর থেকে রাফায়েলের গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরি হয়ে গেছে। কর্মরত বা কোনও অবসরপ্রাপ্ত কর্মী চুরি করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। গোপনীয় নথি প্রকাশ্যে আসা সম্ভব নয় অথচ সেই নথিই প্রমাণ হিসাবে আদালতে দাখিল করেছে মামলাকারীরা। এটা আদালত অবমাননা এবং অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের পরিপন্থী’।

অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শোনার পরই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানতে চান ‘সরকার এর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে’। উত্তরে বেণুগোপাল জানেন, ‘চুরির তদন্ত শুরু হয়েছে’।

রাফায়েল চুক্তির মামলার রায় পুনর্বিবেচনাকারীদের মধ্যে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানেন, ‘কয়লা কেলেঙ্কারি, টুজি কেলেঙ্কারি মতো মামলায় বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি আদালতে এর আগেও পেশ করা হয়েছে। সেগুলি বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেগুলিও গোপন নথি ছিল। অথচ সেই সময় কোনও প্রশ্ন ওঠেনি’। প্রধান বিচারপতি সেই সময় প্রশ্ন তোলেন ‘কোনও মারাত্মক অপরাধ হলে কি জাতীয় নিরাপত্তার ছাতার তলায় আশ্রয় নেওয়া সম্ভব হবে’?

বিরোধীদের দিকে নিশানা করে অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতের সামনে অভিযোগ তোলেন, বিরোধী এবং মামলাকারীরা এই সব যুক্তি দেখিয়ে আসলে রাফায়েল যুদ্ধবিমান পাওয়ার প্রতিক্রিয়াতে বাধা দিচ্ছেন’।