• facebook
  • twitter
Friday, 4 October, 2024

চিন্তা-ভাবনা ও কাজে পবিত্রতা থাকলে জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে ভারসাম্য ও শান্তি রক্ষা করা যায়: রাষ্ট্রপতি

পার্থিব বস্তু আমাদের ক্ষনিকের শারীরিক এবং মানসিক তৃপ্তি দেয়। যেটাকে আমরা প্রকৃত সুখ বলে মনে করি। এবং এর মধ্যে নিজেদের নিমগ্ন করে ফেলি। এই সংযুক্তি আমাদের দুঃখ এবং অসন্তুষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

শুক্রবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, আধ্যাত্মিকতা আভ্যন্তরীণ ভারসাম্য এবং শান্তি আনার ফলে সামাজিক সমস্যাগুলির সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শুক্রবার প্রজাপিতা ব্রহ্মকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ব বিদ্যালয় আয়োজিত ‘পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর সমাজের জন্য আধ্যাত্মিকতা’ শীর্ষক গ্লোবাল সামিটে ভাষণ দেওয়ার সময় এই কথা বলেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বের সমস্যার সমাধানে মানুষের মধ্যে শান্তি এবং একতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরি।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন,’একমাত্র আমরা যখন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করি, তখন আমরা অন্যের প্রতি সমব্যথী ও ভালোবাসা বিলাতে পারি। ‘ব্রহ্মা কুমারী’র মতো যোগ ও আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের অন্তরের শান্তি খুঁজে পাই। এই শান্তি শুধুমাত্র আমাদের ব্যক্তিগত উন্নতি নয়, বরং গোটা সমাজের উন্নতি সাধন করে।’

রাষ্ট্রপতি তাঁর বক্তব্যের সপক্ষে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আধ্যাত্মিকতা মানে ধর্ম পালন করা বা জাগতিক কাজকর্ম ত্যাগ করা বোঝায় না। আধ্যাত্মিকতা মানে ভিতরের শক্তিকে চিনতে পারা এবং চিন্তাভাবনা ও কাজকর্মে পবিত্রতা আনা। যার মাধ্যমে জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে ভারসাম্য ও শান্তি রক্ষা করা যায়। একটি পরিচ্ছন্ন এবং স্বাস্থ্যকর সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে এটা খুবই জরুরি।’

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘এই আধ্যাত্মিকতার অর্থ শুধুমাত্র ব্যক্তিগত উন্নতি নয়, সেইসঙ্গে সামাজিক পরিবর্তন আনাও এর অন্যতম লক্ষ্য। যখন আমরা আমাদের অন্তরের পবিত্রতা উপলব্ধি করতে পারব, তখন আমরা একটি সুস্থ এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে নিজেদের নিয়োজিত করতে পারব। আধ্যাত্মিকতা সমাজ ও পৃথিবীর সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক বিষয়কে শক্তিশালী করে। যেমন- টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং সামাজিক ন্যায়বিচার।’

মুর্মু বলেন,’এই শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক পবিত্রতা হল সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। সুতরাং আমাদের শুধুমাত্র বাহ্যিক পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিলে হবে না, সেই সঙ্গে মানসিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে পবিত্র হতে হবে। সামগ্রিক সুস্থতা নির্ভর করে পবিত্র মানসিকতার ওপর। আবার মানসিক স্বাস্থ্য নির্ভর করে সঠিক চিন্তাভাবনার ওপর। এটি মানুষের কথাবার্তা ও আচার-আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। সেজন্য মানুষের কথাবার্তা এবং আচার-ব্যবহারের মাধ্যমে তাঁর মানসিকতা প্রতিফলিত হয়। আমাদের অন্যের সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে নিজেদের দিকে অন্তর্দৃষ্টি দেওয়া উচিত। এর ফলে আমরা নিজেদের মূল্যায়ন করলে অন্যের পরিস্থিতি বুঝতে সমর্থ হব। তখনই অন্যের সম্পর্কে আমরা সঠিক মতামত ব্যক্ত করতে পারব।’

রাষ্ট্রপতি বলেন,’পার্থিব বস্তু আমাদের ক্ষণিকের শারীরিক এবং মানসিক তৃপ্তি দেয়। যেটাকে আমরা প্রকৃত সুখ বলে মনে করি। এবং এর মধ্যে নিজেদের নিমগ্ন করে ফেলি। এই সংযুক্তি আমাদের দুঃখ এবং অসন্তুষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে অধ্যাত্মিকতা আমাদের অন্তরকে জানতে ও চিনতে সাহায্য করে।’