নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য, ‘দ্বাদশ শতকে তৈরী এই পবিত্র জগন্নাথধাম বিজেডি সরকারের হাতে নিরাপদ নয়।’ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর অঙ্গুলে একটি নির্বাচনী জনসভা করেন।সেখান থেকে তিনি বলেন, ‘বিজেডি-র শাসনকালে পুরীর এই জগন্নাথ মন্দির নিরাপদে নেই। রত্ন ভাণ্ডারের চাবি গত ছয় বছর ধরে পাওয়া যায়নি।’
দ্বাদশ শতকের এই রহস্যময় রত্ন ভাণ্ডার খোলার জন্য সম্মতি জানিয়েছে শ্রী জগন্নাথ টেম্পল ম্যানেজিং কমিটি। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সাধারণ মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। ২০২৪ সালে রথযাত্রা উৎসবের সময় এই রত্ন ভাণ্ডার খোলা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। রত্ন ভাণ্ডার প্রথম খোলা হয় ১৯৭৮ সালে। এরপর ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ফের খোলা হয় ভাণ্ডার। যদিও শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের ১৯৫৫ সালের আইন অনুযায়ী, রত্ন ভাণ্ডার পরীক্ষার অনুমতি রয়েছে। তা সত্ত্বেও এই ভাণ্ডারের ভিতর কী রয়েছে, তা দীর্ঘকাল প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
ভোট প্রচারে ওড়িশার অনুন্নয়ন, দারিদ্র্য ও পিছিয়ে পড়া নিয়ে বিজেডি সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন, ওড়িশা থেকে বিজেডি সরকারের যাওয়ার পালা এসে গিয়েছে। ওড়িশাকে ধ্বংস করে দিয়েছে এই সরকার। তার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।মুখ্যমন্ত্রীর দফতর এবং বাসভবনে যারা বসে রয়েছে, তারা সকলেই ভ্রষ্টাচারী। বিজেডির ছোটখাটো নেতারাও কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, এই রাজ্য খনিজ সম্পদে ঐশ্বর্যশালী। কিন্তু, এখানকার মানুষ তার সুফল থেকে বঞ্চিত। ২০১৪ সালে কেন্দ্র একটি নতুন খনিজ উৎপাদন নীতি গ্রহণ করেছিল। যাতে ওড়িশাকে প্রচুর রয়্যালটি দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, নবগঠিত জেলা খনিজ তহবিলে ওড়িশাকে ২৬ হাজার কোটি দেওয়া হয়েছে। এই টাকা রাস্তা, স্কুল এবং পানীয় জলে খরচ করার কথা। কিন্তু বিজেডি সরকার সেই টাকার অপব্যবহার করেছে। ফলে এই সরকারের হাতে না খনিজ সম্পদ, না সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কিছুই নিরাপদ নয়।
এদিন সকাল থেকেই মানুষের ভিড় ছিল রাস্তাঘাটে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেখতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছিলেন কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রী রোড-শো শুরু করতেই চারিদিক থেকে পুষ্পবৃষ্টি হয়। বিজেপি প্রার্থী সম্বিত পাত্র ও বিজেপি বিধায়ক জয়ন্ত সারাঙ্গির হয়ে প্রচার করেন প্রধানমন্ত্রী। মারচিকোট চক থেকে রোডশো শুরু হয়, পুরীর মেডিক্যাল স্কোয়্যার পর্যন্ত। উল্লেখ্য, আগামী ২৫ মে, লোকসভার ষষ্ঠ দফায় ভোট রয়েছে পুরীতে। এখান থেকে বিজেপি-র টিকিটে লড়ছেন সম্বিত পাত্র। গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ওডিশায় পা রাখলেন মোদী।
২০০৯ সালে সম্পর্ক ছিন্ন করার আগে দীর্ঘদিন জোট বেঁধে ওডিশায় শাসন করেছিল বিজেপি এবং বিজেডি। ফের একবার চলতি লোকসভা এই দুই দলের মধ্যে জোট তৈরির সম্ভাবনা জল্পনা উঠেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তা ফলপ্রসূ হয়নি।