চণ্ডীগড়, ৩ ফেব্রুয়ারি – পদত্যাগ করলেন পাঞ্জাবের রাজ্যপাল বানোয়ারি লাল পুরোহিত। শনিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে লেখা ইস্তফাপত্রে তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কারণ ও কিছু অন্যান্য বাধ্যতামূলক প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্যই ইস্তফা দিতে চান তিনি। তাঁর আবেদন মঞ্জুর করার আর্জি জানিয়েছেন বানোয়ারি লাল। রাজ্যপালের আচমকা এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘিরে জোরদার জল্পনা শুরু হয়েছে। তিনি নিজেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নাকি কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনীতির অন্দরে। তবে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির জেরেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত।
শুক্রবারই মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান দিল্লিতে রাজ্যপালের তীব্র সমালোচনা করেন। বলেন, রাজ্যপাল পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করছেন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করাই তাঁর কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিল পাশ করাতে দেরি করেন রাজ্যপাল। বিষয়টি গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। গত নভেম্বরে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে পাঞ্জাব সরকারের দায়ের করা মামলাটির শুনানি ছিল। শীর্ষ আদালত জানায়, রাজ্যের প্রধান হিসেবে একজন রাজ্যপাল এভাবে বিল পাশ করাতে দেরি করাতে পারেন না। সেই সঙ্গে এও বলা হয়, নিজের সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করে বিল আটকে রাখতে পারেন না তিনি।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে তীব্র ভৎসর্না করে। রাজ্য সরকারের একাধিক বিল আটকে রাখা এবং বিধানসভার অধিবেশনে সায় না দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় প্রবীণ এই রাজনীতিকের উদ্দেশে বলেছিলেন, মনে রাখবেন আপনারা নির্বাচিত প্রতিনিধি নন, কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা মনোনীত। আপনাদের কাজ নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করা। কাজে বাধা সৃষ্টি করা নয়। তার আগে বিধানসভার অধিবেশন ডাকাতে রাজ্যপালের অনুমতি বাধ্যতামূলক নয় বলে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
২০২১ থেকে তিনি পাঞ্জাবের রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। এর আগে অসম এবং তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল ছিলেন তিনি। পাঞ্জাবে রাজ্যপাল থাকার পাশাপাশি চণ্ডীগড়ের মুখ্য প্রশাসকও ছিলেন তিনি। ইস্তফা দিয়েছেন সেই পদ থেকেও।
কয়েকদিন আগে চণ্ডীগড়ে মেয়র নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে বিজেপি। জয়ের পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করেন বানোয়ারি লাল । এর পরই তাঁর এই ইস্তফার সিদ্ধান্ত, যা ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পাঞ্জাবের রাজ্য রাজনীতিতে। ।