• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পাঞ্জাব বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ

পাঞ্জাব বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হল– কেরলের পর দ্বিতীয় রাজ্য পাঞ্জাব নাগরিকত্ব আইনের বিরােধিতায় জোরদার পদক্ষেপ গ্রহণ করল।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। (Photo: IANS)

পাঞ্জাব বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হল– কেরলের পর দ্বিতীয় রাজ্য পাঞ্জাব নাগরিকত্ব আইনের বিরােধিতায় জোরদার পদক্ষেপ গ্রহণ করল। পাঞ্জাব বিধানসভায় দু’দিনের বিশেষ অধিবেশনে রাজ্যের মন্ত্রী ব্রহ্ম মহিন্দ্র প্রস্তাব পেশ করেন।

তিনি বলেন, ‘সংসদে পাশ হওয়া নাগরিকত্ব সংশােধনী আইনটির জন্য দেশের মানুষ প্রতিবাদে সামিল হয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করছে। প্রতিবাদ বিক্ষোভ হিংসায় পর্যবসিত হচ্ছে। পাঞ্জাবেও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষ শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন’।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং নাগরিকত্ব আইন সংসদে পাশ করানাে ঘটনাকে বড় ট্রাজেডি বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদানের ফলে বৈষম্য সৃষ্টি হবে- দেশের নাগরিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিকারী আইনকে দ্রুত প্রত্যাহার করা দরকার হয়েছে। দেশের সংবিধানে সমস্ত ধর্মের মানুষকে ধর্মাচরণে সমানাধিকার দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টারের সংশােধনও প্রয়ােজনীয়– দেশবাসীর মধ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী ও জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার নিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে কি হচ্ছে? উত্তরপ্রদেশে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। ছাত্ররা দেশজুড়ে প্রতিবাদ করছেন। জার্মানিতে ঠিক এমন ঘটেছিল– প্রথমে কমিউনিস্টদের নিশানা করা হয়েছিল। পরে ইহুদিদের হত্যা করা হয়েছিল। প্রতিবাদ করার সময় হয়েছে। গরিব মানুষরা কোথায় জন্মের সার্টিফিকেট পাবে? এটা বড় ট্রাজেডি। আমাকে এগুলাে দেখতে হচ্ছে, ভালাে হত এগুলাে দেখতে না হলে। আপনি ভ্রাতৃত্ববােধের বন্ধনকে ভেঙে দিচ্ছেন’।

নাগরিকত্ব সংশােধনী বিলের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিল শিরােমণি অকালি দল। রাজ্য প্রশাসনের তরফে পেশ করা প্রস্তাবকে সমর্থন করে দলের নেতা বিক্রম মাঝিতি বলেন, ‘মানুষকে যদি লাইনে দাড়িয়ে নিশ্চিত করতে হয় সে কোথায় জন্ম গ্রহণ করেছে, তাহলে আইনটির বিরােধিতা করছি। দেশের প্রথম রাজ্য কেরল নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। দেশজুড়ে নাগরিকত্ব আইনের বিরােধিতায় লাগাতার প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে তা হিংসায় পর্যবসিতও হয়েছে।

বামপন্থী কেরল প্রশাসনের তরফে নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন সংবিধানের বেশ কয়েকটি ধারাকে লঙঘন করছে- যার মধ্যে সমানাধিকার ও ধর্মীয় নিরপেক্ষতার নীতিকে লঙঘন করা হয়েছে। কেরল প্রশাসনের তরফে পাসপাের্ট আইন ও ফরেনার্স অর্ডারে ২০১৫ সালে যে পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছিল, তার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানানাে হয়েছে।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে সংখ্যালঘু হিন্দু ও অ-মুসলিম জনজাতি ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাদেরকে নতুন আইন ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভের রাস্তা সহজ করে দিল। যদিও সমালােচকরা ভীত, নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জী দেশে বসবাসকারী মুসলিম জনজাতির সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করবে।