চলতি বছরের শুরুতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ধরনা শুরু হয়েছিল রাজধানীর শাহিন বাগে। ওই অবস্থানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদনগুলির ভিত্তিতে শীর্ষ আদালত বুধবার মন্তব্য করেছে, বিক্ষোভ এবং গণতন্ত্র একসঙ্গে চলতে পারে। সেই সঙ্গেই বিচারপতিরা বলেন- পাবলিক প্লেস অনির্দিষ্টকালের জন্য দখল করে রাখা যায় না। যে জায়গা বিক্ষোভকারীরা দখল করে বসে আছে, সেখান থেকে প্রশাসন তাদের হাটিয়ে দিতে পারে। সেজন্য আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই।
বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, আমরা একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে দিতে চাই, পাব্লিক প্লেস অনির্দিষ্টকালের জন্য দখল করে রাখা যাবে না। শাহিনবাগ বা অন্য কোনাে পাব্লিক প্লেস দখল করে রাখা যাবে না। এই ধরনের প্রতিবাদ মেনে নেওয়া যায় না।
সংশােধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে আন্দোলন শুরু হয় দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির শাহিন বাগে। মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলারাই ছিলেন সেই আন্দোলনের পুরােভাগে। দু’মাসের বেশি রাজনৈতিক চাপানউতােরের কেন্দ্র ছিল শাহিন বাগ।
দিল্লি আদালতে শাহিন বাগ আন্দোলনে বিরুদ্ধে আবেদন করেন আইনজীবী অমিত সাহানি। গত বছর জানুয়ারি ওই মামলার শুনানিতে দিল্লি আদালত জানায়, বৃহত্তর জনস্বার্থ এবং দিল্লির আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীর পুলিশের উচিত প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। পরবর্তী সময় ওই মামলাটি পাঠানাে হয় সুপ্রিম কোর্টে।
এছাড়াও বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক নন্দ কিশাের শাহিন বাগ আন্দোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। দিল্লিতে ভােটের আগে শাহিন বাগ আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিজেপি’র প্রবীণ নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। তাঁর দাবি ছিল, এই আন্দোলন থেকে জন্ম নিচ্ছে বহু আত্মঘাতী জঙ্গি।
শাহিন বাগ আন্দোলনকে কটাক্ষ করে একটি ট্যুইট করেন তিনি। সেই টুইটে গিরিরাজ লেখেন- এই শাহিন বাগ এখন আর শুধু জঙ্গি আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল নয়। এটা আসলে আত্মঘাতী বােমা হামলাকারীদের জন্মভূমি। দেশের রাজধানীতে বসে গােটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এই শাহিন বাগ থেকেই। বিক্ষোভ চলাকালীন একদিন শাহিন বাগে গুলি চলে। পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়েই গুলি চালায় এক ব্যক্তি। পুলিশের জেরায় সে জানায়– তার নাম কপিল গুজ্জর। তার বাড়ি নয়ডার কাছে দালুপুরায়।
ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা আন্দোলনের জায়গার বাইরে সে পুলিশের সামনেই দু’দুবার গুলি চালায়। গুলি চালানাের সময় তাকে চিৎকার করে বলতেও শােনা যায়- হিন্দুদের রাজ চলবে। তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।