ভারতীয় সংবিধানকে ‘পবিত্র বই’ হিসেবে ব্যাখ্যা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। (File Photo: IANS)

সংবিধান দিবসে সেন্ট্রাল হলে দু’কক্ষের সাংসদদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মােদি জাতির উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিয়ে বলেন, ভারতীয় সংবিধানের রচয়িতা বি আর আম্বেদকরকে কুর্নিশ। সত্তর বছর ধরে আমরা শক্তহাতে গর্বের সঙ্গে দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা কrছি- আজ তিনি জীবিত থাকলে এটা দেখে খুব খুশি হতেন। পাশাপাশি গণতন্ত্রের ওপর আস্থা রাখার জন্য তিনি দেশের জনগণের প্রশংসা করেন।

সংসদের সেন্ট্রাল হলে তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংবিধানকে ‘পবিত্র বই’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে বলেন, ১৩০ কোটি ভারতীয় জনগণের সামনে নতমস্তকে দাড়িয়ে বলতে পারি, তারা কোনওদিন ভারতের গণতন্ত্রের ওপর আস্থা হারাননি। আমি সবসময়ে দেশের সংবিধানকে পবিত্র বই হিসেবে গণ্য করেছি, যা আমাদের চলার পথের হদিশ দিয়েছে, এগিয়ে চলার পথকে আলােকিত করেছে।

সংবিধান দিবস পালনের ঐতিহাসিক লগ্নে তিনি সংবিধানে উল্লেখিত ভারতীয় জনগণের অধিকার ও কর্তব্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘সংবিধানে মানুষের অধিকার রক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে ঠিকই পাশাপাশি নাগরিক কর্তব্যের সংস্থানও উল্লেখ করা হয়েছে। তাই নাগরিক কর্তব্যের ওপর জোর দেওয়ার সময় এসেছে- আমাদের দায়িত্ব পালনের ওপর জোর দেওয়ার সময় হয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের বিশেষ দিক হল সংবিধানে নাগরিকদের অধিকার ও দায়িত্ব কি তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদেরকে এখন ভাবতে হবে আমরা কিভাবে সংবিধানে উল্লেখিত নাগরিক দায়িত্ব পালন করব। জনগণের অধিকার নিয়ে সংবিধানে উল্লেখিত ধারা নিয়ে প্রায় কয়েক বছর ধরে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, কেননা প্রচুর মানুষ মনে করেন তারা সমতা ও ন্যায় বিচারে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন’।


মহারাষ্ট্রের ঘন ঘন রাজনৈতিক পরিস্থিতির চেহারা বদলাচ্ছে- ফড়নবিশের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের বিরােধিতা করে বিরােধী দলগুলি সংবিধান দিবসের ইভেন্ট বয়কট করেন।

তিনি বলেন, অধিকার রক্ষার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি তাদের কর্তব্যর ওপর নজর দেওয়া প্রয়ােজন। আমরা কখনােই নিজেদের দায়িত্ব পূরণ না করে নিজেদের অধিকার রক্ষা করতে পারি না। সংবিধানের শুরুতে লেখা হয়েছে, ‘আমরা ভারতের জনগণ- আমরাই শক্তি, অনুপ্রেরণা ও লক্ষ্য’। সংবিধান দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জাতির জনক মহাত্মা গান্ধির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অধিকার ও কর্তব্যের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার বিষয়টি তিনি খুব ভালাে করে বুঝতেন। এক জন গর্বিত ভারতীয় হয়ে আমাদের উচিত কিভাবে আমরা দেশকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারি তা স্থির করা’। পাশাপাশি তিনি ২৬/১১ হামলার দশ বছর পূর্তিতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।

দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমােহন সিং প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের ব্যাপারে কেন্দ্র সরকার যে ধরণের ব্যবহার করেছে, তাতে আমার কখনােই মনে হয় না যে দেশের সংবিধানে উল্লেখিত নিয়ম-বিধি বর্তমান সরকারের হতে নিরাপদে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে বিজেপি যেভাবে কাকভােরে শপথ গ্রহণ করেছিল, তা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোট সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। আজ শীর্ষ আদালতের তরফে আগামিকাল বিকেল পাঁচটার মধ্যে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন। পাশাপাশি উপমুখ্যমন্ত্রীও ইস্তফা দেন’।