মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে নয়ডা-সহ আশেপাশের এলাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা দ্বিগুন হয়ে গেল। এর জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানকে দায়ী করল উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীপাবলির আগে রবিবার গ্রেটার নয়ডা ও গাজিয়াবাদে বায়ুর গুণমান পৌঁছে যায় ৩০৪-এ, যে সূচক ২৪ ঘন্টা আগে ছিল ১৬৯-এ। প্রসঙ্গত, চলটি মরশুমে এই প্রথম এনসিআর তথা জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের আওতাধীন তিনটি শহরে বায়ুর গুণগত মান এতটা নিচে নেমে গেল। গ্রেটার নয়ডায় অবস্থিত উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক উচ্চপদস্থ কর্তা ডিকে গুপ্তা এই পরিস্থিতির জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছেন।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গুপ্তাকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, ‘এই বছর এই প্রথম একই দিনে নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা, এবং গাজিয়াবাদ এই তিনটি শহরেই বায়ু দূষণের মাত্রা খুব খারাপ বলে চিহ্নিত করা হল। এর জন্য দায়ী প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। ওরা অনেক বেশি পরিমাণে খড় পোড়াচ্ছে এবং সেই দূষিত ধোঁয়া সীমান্ত পেরিয়ে এখানে পাঠাচ্ছে।’ আধিকারিকদের অভিযোগ, যেহেতু বায়ুপ্রবাহ সবসময় অনুকূলে থাকছে না , তাই ওই দূষিত ধোঁয়া এলাকা থেকে দূর করা যাচ্ছে না।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সমস্ত এলাকায় বাতাস স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবেশে দৃশ্যমানতা একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। একইসঙ্গে ওই সমস্ত এলাকার বায়ুর গুণমান সূচক ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
দিল্লির বায়ু দূষণ বারংবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। দূষণ রোধে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়েও শীর্ষ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় শস্যের গোড়া পোড়ানোর জন্যই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তবে উত্তরপ্রদেশের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিক ডিকে গুপ্তার দাবি, পাকিস্তানে শস্যের গোড়া পোড়ানোর জন্যই গাজ়িয়াবাদ, নয়ডা এবং গ্রেটার নয়ডার বাতাস দূষিত হচ্ছে।
গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের তিন শহরেই বাতাসের গুণগত মানের সূচক ছিল অত্যন্ত খারাপ। নয়ডায় সূচক ছিল ৩০৪, গ্রেটার নয়ডায় ছিল ৩১২ এবং গাজিয়াবাদে ছিল ৩২৪। দিল্লিতে রবিবার বাতাসের গুণগত মানের সূচক ছিল ৩৫২। যদিও সোমবার সকালে উত্তরপ্রদেশের তিন শহরেই বাতাসের গুণগত মান অনেকটা উন্নত হয়। নয়ডায় ছিল ২৬৭, গ্রেটার নয়ডায় ২৪৮ এবং গাজিয়াবাদে ২৫২। দিল্লিতে সোমবার সকালে বাতাসের গুণগত মানের সূচক ছিল ৩২৮।
প্রসঙ্গত, বায়ুর গুণগত মান ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তাকে গুণমানের বিচারে ‘ভালো’ বলা হয়ে থাকে। গুণমান ৫১ থেকে ১০০-র মধ্যে থাকলে ‘সন্তোষজনক’ বলা হয়ে থাকে। এই সূচক যখন ১০১ থেকে ২০০-র মধ্যে থাকে তখন তাকে বলা হয় ‘মাঝারি’, এবং এই সূচক বেড়ে ২০১ থেকে ৩০০-র মধ্যে পৌঁছলে বলা হয় ‘খারাপ’। যদি এই সূচক ৩০১ থেকে ৪০০-র মধ্যে পৌঁছয় তবে তা ‘অত্যন্ত খারাপ’ বলে বিবেচিত হয়। সূচক যদি ৪০১ থেকে ৫০০-র মধ্যে পৌঁছে যায় তবে তা ‘ভয়ঙ্কর’ বলে বিবেচিত হয়।