সাত মাস আগে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। সেই শিবির ফের সক্রিয় হয়েছে, এমনটাই খবর ভারতীয় গােয়েন্দাদের রিপাের্টে। জানা গিয়েছে, এই শিবিরে ৪০ জন জেহাদিকে প্রশিক্ষণ দেয়া চলছে। তাদের ভারতে পাঠানাের ছক কষছে পাকিস্তানের জঙ্গিরা।
গােয়েন্দা সূত্রের খবর, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার পর থেকেই সক্রিয় হয়েছে জঙ্গিরা। তাদের প্রত্যক্ষ মদত করছে পাকিস্তান সেনা, এমনটাও জানানাে হয়েছে ঐ রিপাের্টে। জঙ্গিদের বিষয়ে কড়াকড়ি একেবারেই কমিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের প্রশাসন। এমনকী এমন পরিকল্পনাও রয়েছে যে, জইশের হাত ধরে ভারতে সন্ত্রাস চালাতে চাইছে পাকিস্তান।
৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে সিআরপিএফ কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা চালানাের ঠিক ১৩ দিনের মাথায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের খাইবার পাখতুনওয়া এলাকার বালাকোটে অবস্থিত মারকাজ সৈয়দ শাহিদ প্রশিক্ষণ শিবিরের ওপর হামলা চালায় টি মিরাজ বাইসন যুদ্ধবিমান। গুঁড়িয়ে দেয়া হয় এই শি টি। এই ঘটনায় অনেক জঙ্গি নেতা ও সবিরে থাকা জঙ্গিরা খতম হয় বলেও দাবি করে ভারতীয় সেনারা। যদিও ঘটনার পর থেকে বারেবারেই পাকিস্তান এই হামলার কথা অস্বীকার করে এসেছে।
গােয়েন্দা সূত্রে খবর, ৫ আগস্টের পর থেকে তৎপরতা শুরু হয় পাকিস্তানে। জইশ-ই-মহম্মদের কম্যান্ডার মুফতি আবদুল রউফ আসগার রাওয়ালপিন্ডিতে আইএসআই দপ্তরে বৈঠক করেন। সেখানেই এই জঙ্গি শিবির ফের চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গােয়েন্দা রিপাের্টে জানানাে হয়েছে, শুধুমাত্র জম্মু কাশ্মীর নয়, জঙ্গিদের নিশানায় রয়েছে গুজরাত এবং কাশ্মীরও। এবার ভারতের ভিতরের সন্ত্রাসবাদী গােষ্ঠীগুলিকেও কাজে লাগানাের চেষ্টা করছে পাকিস্তানের জঙ্গিরা।
ইতিমধ্যেই কাশ্মীরের জঙ্গি সংগঠন যেমন আল উমনার মুজাহিদিনের সঙ্গে যােগাযােগ শুরু করেছে তারা।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই মানসেরা, গুলপুর, কোটলি এলাকায় নতুন জঙ্গি ভর্তি করা শুরু করেছে জইশ-ই-মহম্মদ। সবাইকে বালাকোটে নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ দিয়ে হামলার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এছাড়াও চারসাদা, মদান, খাইবার পাখতুনওয়া প্রভৃতি এলাকায় জঙ্গিদের ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। একাধিক এলাকা দিয়ে সীমান্তে চাপ বাড়ানাের জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তান।
গােয়েন্দা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই পুঞ্চ ও রাজৌরি সেক্টর দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য ১০০ জঙ্গি তৈরি আছে। জানা গিয়েছে জঙ্গি নেতা মুফতি আসগর নিজে সেখানে গিয়ে জঙ্গিদের নির্দেশ দিয়েছে। তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যে মুহূর্তে ভারতীয় সেনার নিরাপত্তায় গাফিলতি ধরা পড়বে, ঠিক সেই মুহুর্তে হামলা চালাতে হবে।
শুধু মাত্র জইশ নয়, পাকিস্তানের আরেক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবাও একাধিক প্রশিক্ষণ শিবির তৈরি করেছে। তৃতীয় জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনও তাদের জঙ্গিদের সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছে। তাদের মূলত গুরেজ সেক্টরে মােতায়েন থাকতে বলা হয়েছে।