• facebook
  • twitter
Saturday, 5 April, 2025

জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে নিহত ১০ সাধারণ নাগরিক

স্বীকার করল পাকিস্তান প্রশাসন

প্রতীকী চিত্র

জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে পাকিস্তান সেনার গুলিতে প্রাণ হারাতে হয়েছে সাধারণ নাগরিককে। একথা স্বীকার করেছে পাকিস্তান প্রশাসন।  পাকিস্তান বলেছে যে, তারা দেশের উত্তর-পশ্চিমে মারদানে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের সময় এই ঘটনা ঘটে। শনিবার ভোরে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে খাইবার পাখতুনখোয়ার পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গি দমন অভিযানে নেমেছিল পাকিস্তান সেনা। মারদান জেলার তাকলাং তেসিল এলাকার শামোজিয়াতে গুলিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০ জনের। ‘ভুল’ স্বীকার করে বিবৃতি জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। একই সঙ্গে তদন্তের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। জঙ্গি-বিরোধী অভিযানের সময় সাধারণ নাগরিকের হতাহতের তথ্য প্রকাশ করা, পাকিস্তানের পক্ষে বিরল ঘটনা বলে মনে করছেন অনেকে।

শনিবার দিনভর বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হচ্ছিল, পাক সেনার অভিযানে সাধারণ মানুষেরও মৃত্যু হয়েছে। প্রথমে এই ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছিল প্রশাসন। তবে সন্ধ্যার পর প্রশাসনের তরফে সাধারণ বাসিন্দাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। পাক সরকার এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

স্থানীয় সুত্রে খবর, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। সোয়াত অঞ্চলে পাহাড়ি এলাকায় অনেকেই গবাদি পশু চড়াতে নিয়ে যান। শনিবার ভোরেও তাঁরা যখন গিয়েছিলেন, সেই সময়েই পাহাড় বেষ্টিত এলাকা কাতলাং-এ জঙ্গি বিরোধী অভিযান চলছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে জঙ্গিদের আস্তানা খোঁজার সময়  পাকিস্তান সেনা গুলিবর্ষণ শুরু করে। তাতেই অনেক সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয় মানুষ সোয়াত হাইওয়েতে মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভও দেখাতে শুরু করেন।
 
প্রাদেশিক সরকার এই ঘটনা স্বীকার করে এক প্রেস বিবৃতি দিয়েছে। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মুহাম্মদ আলি সইফ বলেন, ‘ এটি একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানের সময় সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রাধান্য পায়। তবে কখনও কখনও এই ধরণের অনিচ্ছাকৃত ঘটনা ঘটে যায়।’  সইফের মতে, এই স্থানটি সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানা এবং ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কিছু নিরস্ত্র অসামরিক মানুষ ঘটনাস্থলের আশেপাশে উপস্থিত ছিলেন। জঙ্গি বিরোধী অভিযানে যেসব সাধারণ মানুষ আহতদের হয়েছেন তাঁদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এই ঘটনার তদন্তে জরুরি পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  
 
২০২২ সালের নভেম্বরে পাক সেনার সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি বাতিল করেছে তেহরিক-ই-তালেবান। তার পর থেকেই পাকিন্তানের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ অনেকটাই বেড়েছে। বিশেষ করে খাইবার প্রদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন।