দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। বাংলাদেশের ইলিশপ্রেমীদের জন্য সুখবর নিয়ে বৃহস্পতিবার পেট্রাপোল সীমান্তে পৌঁছল ইলিশ বোঝাই পাঁচটি ট্রাক। এই পাঁচটি ট্রাকে প্রায় ৩০ টন অর্থাৎ ৩০ হাজার কেজি বাংলাদেশি ইলিশ পেট্রাপোল সীমান্তে পৌঁছেছে। সমস্ত জটিলতার অবসান ঘটিয়ে বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ভারত -বাংলাদেশ সীমান্ত পেট্রাপোলে দুপুর আড়াইটে নাগাদ পৌঁছয় ট্রাক। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৪৯টি সংস্থাকে অনুমোদন দিয়েছে ভারতে ২৪২০ টন পদ্মার মিঠে জলের সুস্বাদু ইলিশ মাছ রপ্তানি করার জন্য। তারপরই বাংলাদেশ থেকে ইলিশের প্রথম চালান নিয়ে ৩০ টন রুপোলি শস্য পৌঁছে গেল ভারতের সীমান্তে। এই আমদানি করা ইলিশ বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই পৌঁছে যাবে কলকাতার হাওড়া, বারাসাত, পাতিপুকুর-সহ জেলার পাইকারি মাছের বাজারগুলিতে। ফলে আশা করা যাচ্ছে শুক্রবার সকাল থেকেই খুচরো বাজারে ক্রেতারা বাংলাদেশের সুস্বাদু ইলিশ কিনতে পারবেন।
গত ২১ আগস্ট বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যেখানে ঘোষণা করা হয় দুর্গাপুজোকে সামনে রেখে প্রতিবেশী ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানি করা হবে। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৩ হাজার টন থেকে ইলিশ রপ্তানির পরিমান ২৪২০ টনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। পশ্চিমবঙ্গে পদ্মার ইলিশের সরবরাহ বাড়লে পুজোর সময় দাম কমবে বলে মনে করছেন ইলিশ আমদানিকারকরা। খুচরো বাজারে পুজোর সময় প্রাথমিকভাবে এক কেজি ওজনের এক টুকরো ইলিশের দাম পড়বে প্রায় ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে একই ওজনের ইলিশের দাম ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকাতেও টাকা নেমে আসতে পারে বলে মনে করছেন শহরের মাছ আমদানিকারক সমিতির সম্পাদক সাইদ আনোয়ার মাকসুদ।বাংলাদেশি ইলিশের পুরো চালান ১২ অক্টোবরের মধ্যে ভারতে রপ্তানি করা হবে। তবে মোটামুটিভাবে ইলিশের দাম ১৫০০ থেকে ২০০০ তারেকের মধ্যে থাকবে বলে মনে করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।
এই বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসে শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশ ভারতে পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, বিভিন্ন মাছ আমদানিকারকদের অনুরোধে ভারতে দুর্গাপুজার আগে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে ৯ সেপ্টেম্বর এফআইএ আবেদন করেছিল দুর্গাপূজার কথা বিবেচনা করে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হোক। কারণ বাংলাদেশ থেকে ১৯৯৬ সাল থেকে ইলিশ আমদানি করে আসছে। তারপরই সিদ্ধান্তের বদল হয়।
বাংলাদেশের মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকদের একাংশের মতে, পদ্মার মিষ্টি জলের ইলিশ স্বাদে-গন্ধে উচ্চমানের হবে। রপ্তানির আগে ইলিশের গুণগত ম্যান যাচাইও করেছেন তাঁরা। ধাপে ধাপে ইলিশ ঢুকবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে। ফলে খুচরো বাজারে পুজোর আগেই পৌঁছে যাবে বাঙালির প্রিয় ইলিশ।