আমজনতার অগোচরেই স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জিএসটি’র বোঝা ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়ে গেল ১৮ শতাংশ। এবার তার সঙ্গে জুড়ছে আরও কিছু জটিল হিসাব।
গত সপ্তাহে চণ্ডীগড়ে জিএসটি কাউন্সিলের যে দু’দিনব্যাপী বৈঠক হয় সেখানে যে প্রস্তাবগুলি করা হয়েছিল তাতে ইতিমধ্যেই সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্র।
ফলে স্বস্তি দূরে থাক, নতুন করে কাঁচি পড়ছে মানুষের পকেটে। মাস তিনেক আগেই প্রায় ৮০০ জীবনদায়ী ওষুধের দাম বেড়েছে।
আর এবার হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ বাড়তে চলেছে। করোনাকালে হাসপাতালের খরচের বোঝা বেড়েছে করোনাবিধির কারণে যা বর্তমানেও চলছে এবং কতদিন চলবে তার কোনও স্পষ্ট দিশা নেই।
এবার তার সঙ্গে যুক্ত হল জিএসটির অতিরিক্ত খরচ। কারণ হাসপাতালের দৈনিক শয্যাভাড়া হোক কিংবা ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট, সবের উপরেই জিএসটি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, এতদিন যে সমস্ত শয্যার দৈনিক ভাড়া হিসাবে কোনও ব্যক্তিকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হত নতুন কর কাঠামোয় এবার থেকে তাঁকেই দিতে হবে ৫২৫০ টাকা।
ফলে খরচ যে কতটা বাড়ছে তা স্পষ্ট। বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট বা চিকিৎসা ক্ষেত্রের বর্জ্য নষ্ট করার জন্য বিশেষ প্ল্যান্ট ইনস্টল করা হয় হাসপাতালগুলিতে তার উপরেও বসছে ১২ শতাংশ কর।
অভিজ্ঞ মহল এ বিষয়ে নিশ্চিত যে হাসপাতালগুলি কোনওভাবেই এই খরচ নিজেদের কাঁধে নেবে না, ফলে খরচের বোঝা চাপবে সাধারণ মানুষের উপরেই।
জিএসটি বৃদ্ধির এই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই খুশি নয় স্বাস্থ্যক্ষেত্র।নতুন নিয়মে করের কাঠামো কীভাবে বিন্যস্ত হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়।
হাসপাতালের কোন খাতে কত খরচ চাপছে তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। এবং পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ দুইভাবেই খরচ বাড়বে আমআদমির।
দৈনিক হিসাবে বেড খরচ ‘শুধুমাত্র ২৫০ টাকা বেশি’ বলে মনে হলেও মোট খরচের অঙ্ক যে অনেকটাই বেড়ে যাবে তাতে নিশ্চিত চিকিৎসা ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা।
এমনকী স্বাস্থ্যবিমার উপর ১৮ শতাংশ জিএসটির বোঝা কমানোর পথেও হাঁটেনি কেন্দ্র।
কিন্তু আখেরে গোটা দেশে স্বাস্থ্যবিমার বাইরে রয়েছেন প্রায় ৬২ শতাংশ মানুষ, যাঁদের হাসপাতালের খরচ মেটাতে হয় নিজের পকেট থেকেই। ফলে পকেট কাটা যাবে আম আদমিরই।