• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

লকডাউনে ৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে রেশন পেয়েছেন মাত্র ২০ লক্ষ

করোনা সংক্রমণ রুখতে গত ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন ছিল দেশে। সবথেকে বেশি দুর্দশায় পড়েছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।

পরিযায়ী শ্রমিক (Representational Image: AFP)

করোনা সংক্রমণ রুখতে গত ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন ছিল দেশে। সবথেকে বেশি দুর্দশায় পড়েছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক’রা। হেঁটে নিজ রাজ্যে ফিরতে গিয়ে কয়েকশো শ্রমিকের মৃত্যুও হয়েছে। দুর্ঘটনাতেও মারা গিয়েছেন অনেকে।

পরিযায়ী শ্রমিকদের এই দুর্দশা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে জোরাল করছিল। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির শীর্ষ নেতারা মুখর হয়েছিলেন। গেরুয়া শিবিরের অন্দরেও তৈরি হয়েছিল চাপ। এই পরিস্থিতিতে মে মাসের মাঝামাঝি আত্মনির্ভর ভারত গড়তে ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজও ঘোষণা করা হয়েছে মোদি সরকারের তরফে।

সেই সময় জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের মে ও জুন এই দুই মাসের খাদ্যশস্য বিনামূল্যে দেওয়া হবে। কিন্তু সরকারি তথ্য বলছে, জুন মাস পর্যন্ত মোট ২০ লক্ষ ২৬ হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের হাতে সরকারি রেশন পৌঁছেছে। এই তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা ও খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রক।

এই খবর সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশের রাজনীতিতে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। আত্মনির্ভর ভারতের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন, তার বিস্তারিত তথ্য দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, যাদের রেশন কার্ড নেই, তাদের আগামী দু’মাস প্রতি মাসে ৫ কেজি করে চাল বা গম দেওয়া হবে। আর পরিবার পিছু এক কেজি করে ছোলা তারা পাবে।

৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের এই পরিষেবা দিতে সরকার সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা খরচ করবে। যদিও কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা ও খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রকের তরফে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, সরকারের ঘোষিত রেশন পেয়েছে মাত্র ২০ লক্ষ ২৬ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক।

ফলে, সুবিধাভোগী শ্রমিকদের মাত্র ২.২৫ শতাংশ মানুষের কাছে এই সরকারি সুবিধা পৌঁছেছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে মোট ৭ লক্ষ ৯৯ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য পৌছনোর কথা থাকলেও বাস্তবে তা পৌঁছেছে মাত্র ১০ হাজার ১৩১ মেট্রিক টন।

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও রাজ্যগুলিতে মোট ৪ লক্ষ ৪২ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ১০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি পরিমাণ খাদ্যশস্য শ্রমিকদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে। ফলে রীতিমত ঢাকঢোল পিটিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর কথা কেন্দ্র ঘোষণা করলেও বাস্তবে সিংহভাগ পরিযায়ী শ্রমিক এই প্রকল্পের আওতার বাইরেই থেকে গিয়েছে।