• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে রাজনীতি করছেন বিরোধীরা , কটাক্ষ মোদির  

দ্রাস, ২৬ জুলাই –  সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য সবসময় সক্ষম রাখতেই অগ্নিপথ প্রকল্প। এই প্রকল্প সেনাবাহিনীর একটি প্রয়োজনীয় সংস্কার।  কার্গিল ক বিজয় দিবসে এই ভাষাতেই অগ্নিপথ নিয়ে যাবতীয় বিতর্কের অবসান করতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর অভিযোগ, অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে রাজনীতি করছে বিরোধীরা। পাঁচ বছর আগে তাঁর দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের সূচনায় কার্গিল বিজয় দিবস কর্মসূচিতে মোদি  জানিয়েছিলেন, ১৯৯৯ সালের

দ্রাস, ২৬ জুলাই –  সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য সবসময় সক্ষম রাখতেই অগ্নিপথ প্রকল্প। এই প্রকল্প সেনাবাহিনীর একটি প্রয়োজনীয় সংস্কার।  কার্গিল ক বিজয় দিবসে এই ভাষাতেই অগ্নিপথ নিয়ে যাবতীয় বিতর্কের অবসান করতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর অভিযোগ, অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে রাজনীতি করছে বিরোধীরা। পাঁচ বছর আগে তাঁর দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের সূচনায় কার্গিল বিজয় দিবস কর্মসূচিতে মোদি  জানিয়েছিলেন, ১৯৯৯ সালের যুদ্ধের সময় তিনি কার্গিলেই ছিলেন। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রিত্বের তৃতীয় মেয়াদে, ২৫ তম কার্গিল বিজয় দিবসে মোদি সরাসরি কার্গিল যুদ্ধের শহিদ এবং বীর সেনানীদের অবমাননার অভিযোগ তুললেন পূর্বতন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে।

কার্গিল বিজয় দিবসের ২৫ বছর পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গিয়েছেন দ্রাসে। শুক্রবার  মোদি দেশের জন্য বলিদান দেওয়া সেনানীদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।  সেখানে সেনা জওয়ানদের সাক্ষী রেখেই প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “আজ থেকে ২৫ বছর আগে ভারত কেবল যুদ্ধে জেতেনি। পাশাপাশি সত্য, প্রতিরোধ এবং শক্তির অসাধারণ উদাহরণ রেখেছিল। লাদাখের এই পবিত্র ভূমি আজ কার্গিল বিজয়ের ২৫ বছর উদযাপন করছে। দেশের জন্য যাঁরা আত্মবলিদান দিয়েছেন, আজকের দিনটা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে তাঁরা দেশের ইতিহাসে অমর।”

এরপর এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। এর পর সরকারি সভায় পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের পাশাপাশি নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর পূর্বসূরি মনমোহন সিংহের সরকারকে। মোদি  বলেন, ‘‘এর আগে যাঁরা কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিলেন, কার্গিলের সেনানীদের স্মৃতিতে কোনও স্মারক নির্মাণের প্রয়োজনীয়তাই তাঁরা অনুভব করেননি। শহিদদের প্রতি সম্মান দেখাননি।’’

পাকিস্তানকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী। দ্রাসে দাঁড়িয়ে তাঁর বার্তা, সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকদের জানিয়ে দিতে চাই, ওদের জঘন্য ষড়যন্ত্র কোনওদিন সফল হবে না। সন্ত্রাসবাদীদের গুঁড়িয়ে দেবে আমাদের সেনা। যোগ্য জবাব দেবে শত্রুদের।  মোদি বলেন,  ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি পাকিস্তান। প্রতিবেশী দেশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মোদির কড়া বার্তা, “আজ আমি এমন একটা জায়গা থেকে কথা বলছি, যেখান থেকে সন্ত্রাসবাদীরা সরাসরি আমার কথা শুনতে পাবে। নাশকতার প্রতিভূদের স্পষ্ট জানাতে চাই, তোমাদের ষড়যন্ত্র কোনওদিন সফল হবে না। উলটে আমাদের সেনা সমস্ত জঙ্গিদের গুঁড়িয়ে দিয়ে শত্রুর মুখে যোগ্য জবাব দেবে।”

তিনি বলেন, অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে বিরোধীরা যা করছে তা রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়। এরাই সেইসব মানুষ যারা চেয়েছিল ভারতীয় বিমানবাহিনীতে আধুনিক যুদ্ধবিমান ‘তেজস’ যাতে না আসে। তারা চেয়েছিল তেজস যুদ্ধবিমান বাতিল করতে। অগ্নিপথ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীতে তরুণ রাখাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য। যে কোনও সময় যুদ্ধের জন্য বাহিনীকে প্রস্তুত রাখাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনক হল জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়কে কিছু মানুষ রাজনীতির বিষয় করেছে। নিজেদের স্বার্থে মিথ্যার রাজনীতি করছে। দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দিতে চাইছেন।  অথচ এরাই তাদের আমলে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করেছিল।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশ এই উদ্বেগের সমাধান করেছে।

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, আমাদের সেনা পূর্ণ শক্তিতে সন্ত্রাসবাদকে খতম করে দেবে। অতীতে পাকিস্তান অসংখ্যবার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে। তবুও ওদের শিক্ষা হয়নি। মহড়া যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদীদের মদত দিয়ে ওরা এখনও সেই চেষ্টা ছাড়েনি। একইসঙ্গে বিরোধীদের লক্ষ্য করে বলেন, আগে কিছু লোক ভাবত সেনা মানে রাজনীতিবিদদের কুর্নিশ করার যন্ত্র। তাদের জন্য কুচকাওয়াজ করার জন্য রয়েছে ভারতীয় সেনা। কিন্তু আমাদের কাছে সেনা মানে ১৪০ কোটি ভারতবাসীর আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক।

পেনশনের টাকা বাঁচাতে অগ্নিপথ প্রকল্প চালু করা হয়েছিল এমন দাবিও নস্যাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাহুল গান্ধি কিংবা কোনও বিরোধী নেতানেত্রীর নাম না করে মোদি  বলেন, ‘এদের আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই, আজকের নিয়োগকারীদের জন্য পেনশনের প্রশ্ন ৩০ বছর পর উঠবে, সরকার কেন আজ সিদ্ধান্ত নেবে ?’

কার্গিল বিজয় দিবস কর্মসূচিতে মোদির মন্তব্যের পরে কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরম বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন যে আমরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছি। তিনি ৩০ বছর পরে কী হবে, তা নিয়ে কথা বলছেন। এই অগ্নিবীরদের চার বছর পরে কী হবে তা নিয়ে তাঁর কথা বলা উচিত।’’

উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একাধিকবার কাশ্মীরে সেনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। তাতে শহিদ হয়েছেন ভারতীয় জওয়ানরা। সূত্রের খবর, সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে পাকিস্তান থেকে ভারতে ঢুকে ওই জঙ্গিরা হামলা চালাচ্ছে। এমনকি পাক সেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরাজঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে খবর। কাশ্মীরে সেনার নিরাপত্তা নিয়ে কেন্দ্রের ‘উদাসীনতা’ নিয়ে তোপ দেগেছে বিরোধীরাও। এই পরিস্থিতিতে কার্গিলে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে সরাসরি তোপ দাগলেন মোদি।