বাথরুম বা টয়লেটের ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়৷ বর্তমান সময় অফিস থেকে বাসা-বাডি়, সব জায়গাতেই বর্তমানে টয়লেটে কমোডের ব্যবহার দেখা যায়৷ তবে এই কমোডের ব্যবহার অনেকেই জানেন না৷
টয়লেটের পর ফ্ল্যাশ করার সময় বেশিরভাগ মানুষেরই কমোডের ঢাকনা দেওয়ার কথা একেবারেই মনে থাকে না৷ কমোড ঢেকে ফ্ল্যাশ করার যে বিশেষ কোনোও প্রয়োজন থাকতে পারে, তেমন কথাও অনেকেই জানেন না৷ নিয়মিতই বাথরুম বা টয়লেট পরিষ্কার করে সবাই৷ তবে পরিষ্কারের পরে বাথরুম দেখতে ঝকমকে লাগলেও জীবাণুর বিস্তার এই জায়গা থেকেই বেশি হওয়ার সম্ভবনা থাকে৷
যে কারণে কমোডের ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ফ্লাশ করতে পরাশর্ম দেওয়া হয়৷ না হলে জলের তোড়ে জীবাণু ও ক্ষতিকর কণা বাতাসে উড়ে উড়ে বাথরুমে রাখা টুথব্রাশসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়৷ তবে স্নান করা বা শাওয়ার নেওয়ার সময় যদি কমোডের ঢাকনা খোলা থাকে তাহলেও কি জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে? কারণ স্নানের সময় জল ছিটে কমোডের মধ্যে তো পড়েই৷
সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা টিকটিকে ভিডিও দিয়ে টরোন্টো নিবাসী ক্রিস্টিনা এনগুয়েন দাবি করেন- শাওয়ার নেওয়ার সময় বাথরুমে যে বাষ্প ও জলের কণা ছিটতে থাকে, সেটার মাধ্যমে কমোডের জীবাণু সারা জায়গায় ছড়িয়ে পড়া ছাড়াও ত্বকেও লাগে৷ যে কারণে ব্রণের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে৷
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নিউইয়র্ক সিটির নিবন্ধিত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ব্রেন্ডান ক্যাম্প বলেন, ‘টয়লেটের মধ্যে যেসব অণুজীব পাওয়া যায় সেগুলো সাধারণত হজমতন্ত্র বা পেটে বাস করতে পারে এরকম জীবাণু৷ যেমন- ই. কোলি ব্যাক্টেরিয়া; যেটার কারণে ডায়রিয়া বা খাবারে বিষাক্ততা তৈরি করে৷’
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিদনে তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের জীবাণু ব্রণ তৈরিতে কোনো ভূমিকা রাখে না৷’
যদি কারও ব্রণের সমস্যা দেখা দেয় সেটা হতে পারে নিয়মিত ত্বক পরিচর্যার অভাব বা সঠিকভাবে ত্বকের যত্ন নেওয়া হচ্ছে না৷ আবার শারীরিক অনেক কারণেও ব্রণ উঠতে পারে৷
তাই কমোডের ঢাকনা খোলা বা বন্ধের সাথে ব্রণ ওঠার কোনো সম্পর্ক নেই৷ বরং সঠিক পরিচর্যা এবং বেঞ্জোয়েল পারোঅক্সাইড ও হাইপোক্লোরাস অ্যাসিড সমৃদ্ধ ব্যাক্টেরিয়ারোধী প্রসাধনী ব্যবহারে ব্রণের উপকার পাওয়া যায় জানান এই চিকিৎসক৷
একই প্রতিবেদনে আমেরিকার পরিষ্কার-বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘গ্রোভ কালেক্টিভ’য়ের বিশেষজ্ঞ ক্যারিলানি ব্রাউন ‘ইউনিভার্সিটি অব ওকলাহামা কলেজ অফ পাবলিক হেলথের’ করা গবেষণার ভিত্তিতে বলেন, ‘কমোডের সিট ও ঢাকনা ওঠানো থাকা অবস্থায় ফ্লাশ করলে যত রকম অণুজীব আছে সেগুলো গুলির মতো ছুটে গিয়ে বাতাসে ভাসতে ভাসতে বাথরুমের নানান জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ এমনকি টুথব্রাশেও৷’
তাই পরিষ্কার থাকার অভ্যাসের মধ্যে সপ্তাহে একবার জীবাণুনাশক দিয়ে পুরো বাথরুম ধোয়ার পাশাপাশি স্নান করা ও ফ্লাশ করার সময় ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখার অভ্যাস গড়তে হবে৷